কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার মামলায় গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনসহ চার আসামিকে আবারও রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
Published : 29 Oct 2021, 04:33 PM
কুমিল্লা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার এনামুল হক জানান, শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম ফারহানা সুলতানা পুলিশের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পণ সংঘের পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হামলা, ভাংচুর চালানো হয় অন্তত আটটি মন্দিরে।
পরে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা কোরআন অবমাননার মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা এনামুল বলেন, ইকবালসহ চারজনকে আদালতে তুলে দ্বিতীয় দফায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর পুলিশ ইকবালসহ চারজনকে আরও সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ইকবালের (৩৫) বাড়ি কুমিল্লা শহরের সুজানগরের খানকা মাজার এলাকায়। ওই এলাকার নূর মোহাম্মদ আলমের ছেলে ইকবাল পেশায় রঙমিস্ত্রি।
ইকবাল ছাড়া অন্য তিনজন হলেন ইকরাম হোসেন রেজাউল, হুমায়ুন ও ফয়সাল আহমেদ।
মণ্ডপে কোরআন রাখার জেরে সেদিনই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলা হয়, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন।
এর পরের কয়েক দিনে নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়। তাতে নোয়াখালীতে নিহত হয় দুজন।
এর মধ্যে কুমিল্লার পুলিশ নানুয়া দীঘির পাড়ের দুটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে ইকবাল নামে ওই যুবককে শনাক্তের কথা জানায়।
একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে এক যুবককে রাত ২টার পর স্থানীয় দারোগাবাড়ী শাহ আব্দুল্লাহ গাজীপুরীর মাজার থেকে বেরিয়ে পূজামণ্ডপের দিকে যেতে দেখা যায়, তখন তার হাতে বই জাতীয় কিছু ছিল।
এরপর ৩টা ১২ মিনিটের দিকে তাকে পূজামণ্ডপের দিক থেকে ফিরে আসতে দেখা যায় আরেক ভিডিওতে, তখন তার হাতে ছিল একটি ‘গদা’।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির ওই পূজামণ্ডপে থাকা হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন রাখা ছিল। তখন হনুমানের মূর্তির হাতে থাকা গদাটি পাওয়া যায়নি।
এরপর ২২ অক্টোবর ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।