‘ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে’ প্রকৌশলীকে ‘মারধর’ ঠিকাদারের

`ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ তুলে বরগুনায় এলজিইডির এক প্রকৌশলীকে মারধর করেছেন বলে এক ঠিকাদার জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে এই ঘটনা ঘটে বলে জানান ঠিকাদার ফরহাদ জমাদ্দার।

তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সদর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান এই ঘটনাকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলেছেন।

বরগুনা পৌরসভার আমতলারপাড়ার বাসিন্দা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলএস এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী ফরহাদ জমাদ্দার সাংবাদিকদের বলেন, “ঘুষ ছাড়া প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের কলম চলে না। ঘুষের জন্য তিনি আমার জামানতের টাকা আটকে রেখেছেন। অনেক ঠিকাদার ঘুষ দিয়ে জামাতের টাকা পেয়েছেন। আমি ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি আমার কাজ করছেন না।

“এজন্য আমি তাকে মেরেছি। পরে আবার তার পা ধরে মাফ চেয়েছি। ঘুষবাণিজ্যের মাধ্যমে বরগুনার আমতলারপাড় এলাকায় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। এছাড়া ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি অঢেল সম্পত্তি গড়েছেন।”

এই ব্যাপারে মিজানুর রহমান বলেন, “ফরহাদ জমাদ্দার আমার এলাকার বড়ো ভাই। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।”

তবে ‘ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির’ মালিক হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই প্রকৌশলী।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল টিটু।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি উপজেলা পরিষদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় দাঁড়িয়েছিলাম। তখন অফিসের সামনের রাস্তায় ঠিকাদার ফরহাদ জমাদ্দার ও প্রকৌশলী মিজানুর রহমানের মধ্যে বাগবিতণ্ডা দেখতে পাই। ঠিকাদার ফরহাদ জমাদার প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে বলছিলেন, ‘অফিসে চলেন। স্বাক্ষর করবেন আর সাইট পরিদর্শনে যেতে হবে।’

“তখন প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ডিসি অফিসে যাচ্ছি জরুরি কাজে।’ এ কথা নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। পরে আমরা কয়েকজন নিচে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি।”

বরগুনার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস কে আরিফুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনা সহ্য করার মতো নয়। এ বিষয়ে আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি।”

এই ঘটনায় কোনো পক্ষ থানায় দেয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সদর থানার ওসি কে এম তরিকুল ইসলাম বলেন, “এ রকম কোনো ঘটনার কথা আমি শুনিনি। কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”