আলোচিত এ মামলার তদন্ত শেষে বুধবার ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে সিলেট পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন।
গত বছর ১১ অক্টোবর সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন বলেন, “রায়হান আহমদকে ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানোর প্রমাণ মিলেছে তদন্তে। বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এএসআই আশেকে এলাহি, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও টিটুচন্দ্র দাস নির্যাতনে অংশ নেন।”
তিনি বলেন, “নির্যাতনের আলামত নষ্ট ও নির্যাতনকারীদের পালাতে সহয়াতা করেন এএসআই হাসান উদ্দিন ও কথিত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান।”
এই ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে বহিষ্কৃত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে রয়েছেন। নোমান এখনও পলাতক রয়েছেন।
তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২, ৫০১ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫(২), ১৫(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
“দুই আইনের একটিতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। অপরটিতে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবনের কথা উল্লেখ আছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।”
এক হাজার ৯৬২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৬৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে ১০ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন; যাদের মধ্যে সাতজন পুলিশ রয়েছেন।
“সাইদুল ইয়াবা সংগ্রহ করতে কাষ্টঘর এলাকায় গিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলাও রয়েছে। সাইদুলের দাবি, ইয়াবা সংগ্রহকালে সেখানে রায়হানের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। সাইদু্লরে অভিযোগ পেয়ে রায়হানকে কাষ্টঘর থেকে ধরে আনে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ।”
রায়হানের মা সালমা বেগম প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছেন, অন্য কারও ইন্ধনে পূর্বপরিকল্পনার জেরে রায়হানকে তুলে এনে নির্যাতন করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, “রায়হানকে নির্যাতনের সঙ্গে পূর্ববিরোধের কিছু পাওয়া যায়নি তদন্তে।”
আরও পড়ুন