আকবরকে গ্রেপ্তারে ‘কিছু বন্ধু সহযোগিতা করেছেন’: পুলিশ

পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ মৃত্যুর ঘটনায় বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়াকে গ্রেপ্তারে পুলিশের ‘কিছু বন্ধু’ সহযোগিতা করেছেন বলে সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেছেন।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2020, 03:14 PM
Updated : 9 Nov 2020, 03:14 PM

সোমবার সীমান্ত এলাকা থেকে আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ফরিদ উদ্দিন জানান।  

সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আকবর হোসেন ভুঁইয়াকে পুলিশের কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মাধ্যমে কানাইঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি ফরিদ বলেন, “গতকাল আমাদের কাছে একটি তথ্য ছিল সে [আকবর] ভারতে পালিয়ে যাবে। তাই আমরা সীমান্তবর্তী এলাকায় অতিরিক্ত নজরদারি শুরু করেছিলাম। পরে আজ [সোমবার] সকালে  তাকে গ্রেপ্তার করি।”

আকবরকে আটকের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে একটি পাহাড়ি এলাকায় কিছু যুবকের হাতে তাকে আটক দেখা যায়্। ওই যুবকদের ভাষার সঙ্গে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার মিল রয়েছে।

‘একটি ভিডিওতে দেখা গেছে ভারতের খাসিয়ারা আকবরকে আটক করেছে’- এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ভিডিও করা হয়নি। ওই ভিডিও কে কোথায় করেছে তা আমাদের জানা নেই। এরকম কিছু আমারা দেখিনি। তবে তাকে জেলা পুলিশের বিশেষ দল কানাইঘাট সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।”

কেউ আকবরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, “কেউ হস্তান্তর করেনি; কিন্তু আমরা পুলিশের সকল কাজে জনগণের সহযোগিতা নিই। তাকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের কিছু বন্ধু সহযোগিতা করেছেন।”

প্রেস ব্রিফিংয়ে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

মফিজ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়; যে অপরাধ করবে তার শাস্তি হবেই। আকবর জঘন্য কাজ করেছে। তাকে শাস্তি পেতেই হবে।”

এদিকে প্রেস ব্রিফিং চলাকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষুব্ধ জনতা ‘ফাঁসি চাই, আকবরের ফাঁসি চাই’ শ্লোগান দিতে থাকেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাদের স্লোগান চলতে থাকে।
এর আগে সন্ধ্যায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কানাইঘাট থেকে আকবরকে সিলেটের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে তাকে এই মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

হেফাজতে নিহত রায়হান আহমদ (৩৩) সিলেট মহানগরীর আখালিয়ার নেহারিপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।

গত ১১ অক্টোবর ভোরে রায়হানের মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে প্রচার করা হয়, ছিনতাইয়ের দায়ে নগরের কাষ্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে নিহত হন রায়হান। তবে বিকালে পরিবারের বক্তব্য পাওয়ার পর ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়।

নিহতের পরিবার দাবি করে, সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।

সেদিন রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের বিরুদ্ধে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।