নিজ দলের নেতা, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে নিয়ে একের পর এক তির্যক বক্তব্য দিয়ে দেশব্যাপী আলোচিত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জা এবার অনিয়ম হলে প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের লাঠিপেটার হুমকি দিয়েছেন।
Published : 14 Jan 2021, 09:57 PM
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা না চাইলে ‘সত্যবচন’ চালিয়ে যেতে পারতেন না বলেও দাবি করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই ভাইর।
আগামী শনিবার বসুরহাট পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে। বর্তমান মেয়র কাদের মির্জা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও অভিযোগ করছেন, স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের জেলা নেতারা তাকে হারাতে চাইছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বসুরহাট রূপালী চত্বরে এক পথসভায় কাদের মির্জা বলেন, “যারা প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্বে আছেন, যদি কোনো কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি হয়, কোনো অনিয়ম যদি ভোটে হয়, কোনো রক্ত যদি এখানে ঝরে, কারও কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে, কারও থেকে সুবিধা নিয়ে যদি জাল ভোট হয়, যদি কোনো অনিয়ম করেন, কোম্পানীগঞ্জের মাটি থেকে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না স্পষ্ট বলে দিচ্ছি।”
“ঠ্যাংগের নিচে দি ভাঙ্গিচুরি লটকাই থুমু এই রূপালী চত্বরে (পায়ের নিচের দিকে ভেঙে রূপালী চত্বরে ঝুলিয়ে রাখব),” আঞ্চলিক ভাষায় বলেন তিনি।
প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের বেশিভাগই বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী।
ভোটের দিন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন কাদের মির্জা।
ফরিদপুরের মুজিবর রহমান চৌধুরী (নিক্সন চৌধুরী)সহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি কাদের মির্জা।
এই সময় তিনি নিক্সন চৌধুরীর সমালোচনা করে বলেন, “নিক্সন চৌধুরী সাহেব, আপনি বলেছেন চুনো পুঁটিদের কথা কে শোনে। শেখ হাসিনার কাছে যাওয়ার এদের কোনো সুযোগ নাই-কিছু বলারও সুযোগ নাই। তো নিক্সন চৌধুরী সাহেবরে জিগ্গাই- আপনার বয়স কত? হ্যাঁ এমপি হইছেন যে! আঁর [আমার] রাজনীতির বয়স হবেনি আপনার বয়স?
“ঠিক আছে আমি চুনোপুঁটি-আমরা গ্রামে থাকি। ভাষা অসুন্দর হলেও ঠিক আছে আমি মেনে নিলাম। আপনি ভালো মানুষটা আপনি আমাদের ত্যাগী নেতা জাফর উল্লা সাহেবের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র দাঁড়াই এমপি হইছেন ভোট চুরি করি। দৈহিক শক্তি আছে, ওই আন্ডুগান্ডু এরা আছে এইজন্য আমনে ভোটে জিতছেন।”
এর আগে নিজের ভাই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনাও করেছিলেন তিনি।
বিকালে এক পথ সভায় কাদের মির্জা বলেন, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না চাইলে নিজের ‘সত্যবচন’ চালিয়ে যেতে পারতেন না তিনি।
“উনার কাছে নিশ্চয়ই খবর আছে। উনি না চাইলে আমার পক্ষে সম্ভব নাকি এটা। আমার নেত্রী না চাইলে প্রথমে তো আমার নৌকা প্রতীকই নিয়ে যেত।”
সাধারণ সম্পাদকের পদে থেকে ওবায়দুল কাদের অনেক কিছু বলতে পারছেন না বলে দাবি করেন কাদের মির্জা।
“উনি তো ন্যায়নীতি সম্পন্ন লোক। উনি হয়ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি থাকার কারণে অনেক সত্য কথাও বলতে পারছেন না। উনি তো নীতি নৈতিকতা নিয়ে রাজনীতি করেন। উনি আমার বিরুদ্ধে নাই।”