বসুরহাটে আ. লীগ মেয়র প্রার্থীর আচরণবিধি সংক্রান্ত সভা বর্জন, সড়ক অবরোধ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা আচরণবিধি সংক্রান্ত সভা বর্জনের পর সড়ক অবরোধ করেছেন।

নোয়াখালী প্রতিনিধিআবু নাছের মঞ্জু, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2021, 01:22 PM
Updated : 3 Jan 2021, 02:07 PM

রোববার বেলা ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সমর্থকদের নিয়ে তিনি উপজেলা সদরে মুজিব চত্বরে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন।

পরে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুল কাদের মির্জা ও তার অনুসারীদের অনুরোধ করলে তারা অবরোধ তুলে নেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল সোয়া ১০ টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে নির্বাচনী আচরণবিধি সংক্রান্ত সভা চলছিল। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বক্তব্য রাখছিলেন।

এই সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম তাকে (আব্দুল কাদের মির্জা) নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে কথা বলার অনুরোধ করেন।

জেলা প্রশাসক মো. খোরশেদ আলম খান বলেন,  এরপর আবদুল কাদের মির্জা সভাস্থল ত্যাগ করেন। পরে তিনি ও তার অনুসারীরা বসুরহাট জিরো পয়েন্টে বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে জড়ো হন। তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করেন। এই সময় আবদুল কাদের মির্জা সেখানে শুয়ে পড়লে তার অনুসারীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকেন।

সমাবেশে আবদুল কাদের মির্জা তার বক্তব্যে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী, ফেনীর সাংসদ নিজাম হাজারী, সন্দ্বীপের সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে পৌর নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ তোলেন।

এছাড়া তিনি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন।

আবদুল কাদের মির্জা নিজ ভাবির (আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী) কথা উল্লেখ করেও উষ্মা প্রকাশ করেন।

সমাবেশে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খিজির হায়াৎ খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আজম পাশা রুমেলসহ স্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দেন।

পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, অবরোধ চলাকালে বিকালে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আব্দুল কাদের মির্জা ও তার অনুসারীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান।

“তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান বেলায়েতের সঙ্গে আলোচনা করে মির্জার অভিযোগগুলোর বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস দিলে বিকালে অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।”

পুলিশ সুপার আরও বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত বিব্রতকর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়েছে। সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির উপস্থিতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

জেলা প্রশাসক মো. খোরশেদ আলম খান বলেন, মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা একটানা দীর্ঘক্ষণ নানা বিষয়ে বক্তব্য দেন। এর এক পর্যায়ে তাকে নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে কিছু বলবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি রাগ করে সভাস্থল ত্যাগ করে বের হয়ে যান। এরপর তার উপস্থিতিতে তার অনুসারীরা প্রথমে উপজেলা পরিষদের সামনে এবং পরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, “আব্দুল কাদের মির্জা কী কারণে আমাকে জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন তা আমার জানা নেই। আমি দলীয় বিষয়ে কথা বলার জন্য দলীয় ফোরাম রয়েছে। তাই আমি বাইরে কাউকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”