ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক আওয়ামী লীগ নেতাকে সমাজসেবার সম্মননা ‘যথাযথ প্রক্রিয়ায় দেওয়া হয়নি’ উল্লেখ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
Published : 07 Jan 2021, 05:52 PM
জেলা প্রশাসক (ডিসি) হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন জানান, তিনি মঙ্গলবার এই চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।
গত শনিবার (২ জানুয়ারি) সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহ আলমকে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা দেয় জেলা সমাজসেবা কার্যালয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন সম্মাননা স্মারক মো. শাহ আলমের হাতে তুলে দেন।
এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন সাংবাদিকদের বলেন, সম্মাননা প্রদানের জন্য মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি।
“কিস্তু জেলা প্রশাসককে দেওয়া সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাসুদুল হক তাপসের লিখিত ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হয়নি। বিতর্কিত ব্যক্তিকে সম্মাননা দেওয়ায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
চিঠির অনুলিপি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকেও দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক জানান।
সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিতি সম্পর্কে হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন সাংবাদিকদের তখন বলেন, “অনুষ্ঠানটি ছিল সমাজসেবা কার্যালয়ের। আমি শুধু সম্মাননা স্মারকটি হস্তান্তর করেছি। শাহ আলমকে সম্মাননা দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা ছিল না।”
প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়
এদিকে, এই ঘটনায় নানা আলোচনার মধ্যে বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছেন সম্মাননাপ্রাপ্ত মো. শাহ আলম।
মতবিনিময় সভায় শাহ আলম লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে শাহ আলম তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেছেন।
একটি ‘দুষ্টচক্র’ তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য এই ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্বাহত বীর মুক্তিযোদ্বা আল মামুন সরকার, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, দলের সদর উপজেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্বা আবুল কালামসহ আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের গরীব-অসহায়দের জন্য সরকারের দেওয়া ওএমএস কার্ডে শাহ আলমের স্ত্রী মোছাম্মৎ মমতাজ আলম ও মেয়ে আফরোজাসহ স্বজনদের নাম ওঠানো হয়। শাহ আলম নিজেও ওএমএসের ডিলার ছিলেন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তুমুল সমালোচনার মুখে গত ১৩ মে শাহ আলমের ওএমএস ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।
ডিলারশিপ বাতিলের বিষয়ে ওই সময় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেছিলেন, “ওএমএস কার্ডের তালিকায় পরিবার ও স্বজনদের নাম ওঠানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় শাহ আলমের ওএমএস ডিলারশিপ বাতিল করা হয়অ”