সমাজসেবা দিবস ২০২১ উপলক্ষে গত শনিবার জেলা সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান তার হাতে সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের এই সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
পরে শাহ আলম নিজেই তার ফেইসবুক আইডি থেকে সম্মাননা পাওয়ার বিষয়ে পোস্ট দেন।
পুরস্কার পাওয়া মো. শাহ আলম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক।
করোনাভাইস মহামারীতে ভিক্ষুকসহ অসহায়-গরিবদের জন্য সরকারের দেওয়া ওএমএস কার্ডে ভাগ বসিয়েছিলেন এই নেতা।
বিষয়টি জানাজানি হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমাজ সেবা বিভাগের উপ-পরিচালকে ব্যাখ্যা তলব করেছেন।
শাহ আলমকে কোন প্রক্রিয়ায় সমাজসেবা সম্মাননার জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সেটি লিখিতভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাসুদুল হাসান তাপসকে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান।
রোববার রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এই চিঠি পাঠানো হয় বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ ওএমএস কার্ডের তালিকায় জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলমের স্ত্রী ও মেয়েসহ ১৩ স্বজনদের নাম ওঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তুমুল সমালোচনার মুখে গত ১৩ মে জেলা ওএমএস কমিটির সভায় শাহ আলমের ওএমএস ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।
ডিলারশিপ বাতিলের বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেছিলেন, ওএমএস কার্ডের তালিকায় পরিবার ও স্বজনদের নাম ওঠানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় শাহ আলমের ওএমএস ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।
এদিকে, সম্মাননা নেওয়ার ব্যপারে জানতে চাইলে মো. শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন সমাজকর্মী। সমাজসেবা কার্যালয় থেকেই আমাকে এই সম্মাননার জন্য বাছাই করা হয়েছে। একটি দুষ্টচক্র রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।”
এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মাসুদুল হাসান তাপস বলেন, “ওনি (শাহ আলম) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষিত একজন সমাজকর্মী। পাশাপাশি আমাদের শিশু পরিবার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য। ওএমএস ডিলারশিপ বাতিলের তথ্যটি আমাদের জানা ছিল না। করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের তাড়াহুড়োর মধ্যে অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। যদি আমরা আগে থেকে জানতাম তাহলে হয়েতো অধিকতর যোগ্যতার মধ্যে তার (শাহ আলম) নামটি আসত না।”
জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সম্মাননা স্বারকটি হস্থান্তর করেছি মাত্র। কোন ক্যাটাগড়িতে তাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে সেটি সমাজসেবা বিভাগ বলতে পারবে।”