শেরপুরে কৃষকের ধান কাটবে পুলিশ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকির কারণে শ্রমিকের সংকটের মধ্যে কৃষকদের ধান কাটাসহ সব ধরনের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে শেরপুরের পুলিশ।

এবার বোরো মৌসুমে ধানের ফলন ভালো হলেও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কেটে ঘরে তুলতে বিপাকে পড়েছেন শেরপুর, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা।

তাদের এই অসহায় অবস্থায় সহায়তায় পুলিশ ছাড়াও এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সংগঠন, যার মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগও রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে নিজে হাতে ধান কেটে পুলিশের এই কাজের উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম। 

উদ্বোধনের পর ‘আমরা আছি কৃষকের পাশে, মানবিক পুলিশের চোখে জনতার আকাঙ্খা লেখা থাকে’- শ্লোগানে বালিয়া গ্রামের কৃষক সামেদুল হকের আট কাঠা জমির ধান কেটে বৃহস্পতিবার তার বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

পুলিশের এ কাজে সহযোগিতা করছে শেরপুর স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম।

এ সময় উপস্থিত গ্রামবাসী ও গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, “শেরপুর জেলায় ৯০ হাজার জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। আমি সকল কৃষককে আশ্বস্ত করতে চাই যে কৃষকরা যেন নিজেদের আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান করেন। এই ধান ঘরে  ওঠানোর ক্ষেত্রে তাদের শ্রমিক লাগবে, গাড়ি  লাগবে, তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো লাগবে; এসব ক্ষেত্রে যেকোনো বিষয়ে যেকোনো সহযোগিতা আমরা করব। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা আজকে ধান কাটা শুরু করেছি।”

ধান কেটে দেওয়াটাও আইনশৃংখলা রক্ষার একটা অংশ বলে মনে করেন এসপি আশরাফুল আজীম।

উদ্বোধনকালে শেরপুর সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি মোখলেছুর রহমান, বাজিতখিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমির আলী সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপকারভোগী কৃষক আবেগাপ্লুত সামেদুল হক বলেন, “পুলিশ ধান কাইট্টা নিয়ে আমার বাড়িতে নিয়া দিতাছে। এতে আমি খুব খুশি। এহন আমার ১২ থেকে ১৫ হাজার টেকা লাগলয়। এই টেকা থাইকা আমি বাইচা গেলাম। আমার খুব উপকার অইছে।”

শেরপুর স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম নেতা ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বলেন, “শেরপুরসহ সারা দেশব্যাপী বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু আমাদের সংকট ও শঙ্কার বিষয় হচ্ছে শ্রমিকের অপর্যাপ্ততা। তাই কৃষকরা শঙ্কাবোধ করছে। এই শঙ্কা কাটানোর জন্য আমরা জেলা ছাত্রলীগ জেলা পুলিশের সমন্বয়ে স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের মাধ্যমে গরিব, অসহায়, দুস্থ কৃষকদের ক্ষেতের ধান কেটে আমরা তাদের ঘরে তুলে দিচ্ছি।”