‘দলীয় কোন্দলে’ হামলায় আহত যুবলীগ নেতা নাসিরের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ এ ঘটনায় পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।
Published : 30 Jan 2020, 07:09 PM
গত ২৭ জানুয়ারি রাত আটটার দিকে রাঙামাটি শহরের প্রত্যাশা ক্লাব এলাকায় ‘ডেকে নিয়ে’ নগরের ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিরকে কুপিয়েছে একদল যুবক। গুরুতর আহত নাসির চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নাসিরের স্ত্রী সালেহা বেগম রাঙামাটি কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলেও পুলিশ অভিযোগটি গ্রহণ করেনি এবং তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে ফেরত পাঠায় বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
সালেহা আক্তার বলেন, পুলিশ তাদের বলেছে ‘উপরের নির্দেশ আছে এ বিষয়ে মামলা না নিতে।’
“আমার শাশুড়ি, নাসিরের ভাই, বোনের জামাই ও দুই সন্তানসহ আমি থানায় গত দুইদিন ধরে গিয়েও মামলা করতে পারলাম না। ওসি আমাদের পাত্তাই দিচ্ছেন না।
“এসি অফিসে দুই ঘণ্টা বসে থেকেও কারো সাক্ষাৎ পেলাম না।”
তবে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কোতয়ালি থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি বলেন, “বিষয়টি রাজনৈতিক, তাই উর্ধ্বতনদের পরামর্শের ভিত্তিতেই পদক্ষেপ নেব। ‘মামলা নেব না’-এমনটা বলিনি, তাদের সাথে খারাপ ব্যবহারের প্রশ্নই ওঠে না।”
‘এ মামলার ইস্যুটি রাজনৈতিক’ উল্লেখ রাঙামাটির পুলিশ সুপার আলমগীর কবিরও বলেন, “আমরা মামলা নেওয়া বা না নেওয়ার কিছুই নেই।
“তারা একবার ২০ জন, একবার ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগ নিয়ে এসেছে, আবার কারো কারো নাম দিয়েছে, যারা ঘটনার সময় ছিল না বলেই জেনেছি আমরা। তাই মূলত তাদের ‘সিদ্ধান্তহীনতার’ কারণেই মামলা হয়নি।”
আহত নাসিরের মা হামিদা বেগম বলেন, “আমার ছেলে সারাজীবন যে দল করল, সেই দলের লোকরাই তাকে হত্যার জন্য কোপাল। এখন আমি আইনের কাছে গিয়েও বিচার পাচ্ছি না।
“আমি রাঙামাটির নেতাদের কাছে, স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি-আমার ছেলের হত্যাচেষ্টাকারীদের যেন গ্রেপ্তার ও বিচার করা হয়। ভবিষ্যতে আর কোনো মায়ের সন্তানকে যেন এমন বর্বরভাবে কেউ হত্যার চেষ্টা না করে।”
আহত নাসির বলেন, “আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হলো। আমি হাসপাতালে শয্যায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছি। আমরা মা, স্ত্রী, ভাই ও সন্তানরা কোতয়ালি থানায় বারবার গিয়েও মামলা করতে পারছে না, এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে? তবে কি আমি বিচার পাব না? দল করে কি অপরাধ করেছি?“
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় জমা দেওয়া নাসিরের স্ত্রী মোছাম্মদ সালেহা আক্তার লিখিত অভিযোগে যুবলীগ, ছাত্রলীগের আট নেতার নাম উল্লেখ করেন।
তাদের একজন রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “অভিযোগটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”