পাবনায় ধর্ষণ মামলা না নিয়ে থানায় ‘ধর্ণকারীর’ সঙ্গে ওই নারীর বিয়ের ঘটনা তদন্তে নেমেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত দল।
Published : 14 Sep 2019, 11:12 PM
শনিবার পাবনা সদর উপজেলার যশোদল সাহাপুর গ্রামে ওই গৃহবধূর বাবার বাড়ি থেকে তারা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
টানা তিনঘণ্টা ওই নারী, তার পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে তদন্ত দলের সদস্যরা সদর থানায় যান।
রোববার তারা পাবনা জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
তিন সদস্যের তদন্ত দলে রয়েছেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহেদ নেওয়াজ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আবু জাফর।
তদন্ত কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ নেওয়াজ বলেন, “আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সকলের বক্তব্য শুনেছি। সদর থানা ও অপরাধ স্থল পরিদর্শন করে তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করেছি।”
তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানালেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
তদন্ত কমিটির সদস্য পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান বলেন, এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতিতা নারীর ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে।
“পুলিশের তদন্তের পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে আমরাও ঘটনা তদন্ত করছি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে। জেলা প্রশাসক পরে প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবেন।”
ইবনে মিজান আরও বলেন, “এ ঘটনায় থানায় বিয়ের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সদর থানার ওসি ওবাইদুল হককে প্রত্যাহার এবং উপ-পরিদর্শক ইকারামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলমান রয়েছে।”
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠায় দলীয় তদন্ত শেষে দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ঘন্টুকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন বলেন, “কারো ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেবে না। এক্ষেত্রে কোনো ধরনেরর নমনীয়তা বা সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই।”
মামলার নথি থেকে জানা যায়, পাবনা সদর উপজেলার সাহাপুর যশোদল গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ চার সহযোগীসহ একই গ্রামের এক নারীকে গত ২৯ অগাস্ট রাতে অপহরণ করে এবং আটকে রেখে টানা চারদিন পালা করে ধর্ষণ করে।
পরে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ আসামি রাসেলকে আটক করলেও মামলা নথিভুক্ত না করে ওই নারীর সঙ্গে থানায় বিয়ে দিয়ে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা চালান।
এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলা দায়ের এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।