পাবনা থানায় বিয়ে: ওসিকে শোকজ, মামলার নির্দেশ

মামলা না নিয়ে ‘ধর্ষণের শিকার’ গৃহবধূর সঙ্গে থানা চত্বরে ‘ধর্ষণকারীর’ বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর পাবনা থানার ওসির ব্যাখ্যা চেয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2019, 01:39 PM
Updated : 11 Sept 2019, 08:43 AM

একইসঙ্গে এ ঘটনায় মামলা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

সোমবার বিকালে পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

গত শুক্রবার রাতে পাবনা সদর থানায় জোর করে এ দুজনের বিয়ে দেওয়া হয় বলে ওই নারীর অভিযোগ। আর যার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘রিমান্ডের ভয় দেখিয়ে’ পুলিশ তাদের বিয়ে দিয়েছে।

এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, সদর থানার দাপুনিয়া ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা না নিয়ে ধর্ষণকারীর সঙ্গে বিয়ের ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। এরপর পুলিশ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গৌতম কুমার বিশ্বাসকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে।

“বিকালে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে থানায় ধর্ষণ মামলা হিসেবে মামলাটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সদর থানার ওসি ওবাইদুল হক থানা চত্বরে কেন এমন কাজ করলেন তার ব্যাখ্যা চেয়ে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”

এছাড়া বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আরও অধিকতর তদন্ত করছে বলেও এসপি রফিকুল ইসলাম জানান।

এ বিষয়ে ওই বিয়ের কাজী মাওলানা আজম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার বাড়ি দাশুড়িয়া থেকে পাবনা সদর থানায় ডেকে নিয়ে বিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। আমি প্রথমে বিয়ে দিতে অস্বীকার করি, কেননা এই বিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

“পরে ওসি স্যারের চাপের পরিপ্রেক্ষিতে তালাক প্রদান সাপেক্ষে আমাকে বাধ্য করানো হয় বিয়ে পড়াতে। আমার কিছুই করার ছিল না।”

এদিকে, ওই এলাকায় সোমবার সকাল থেকে পুলিশের লোকজন ও স্থানীয় ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী’ মেয়ে ও ছেলের পরিবারের লোকজনদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন।

তিন সন্তানের জননী ওই নারীর অভিযোগ, প্রতিবেশী রাসেল আহমেদ গত ২৯ অগাস্ট তাকে তার বাড়িতে নিয়ে এক সহযোগীসহ পালা করে ধর্ষণ করে। দুদিন পর তাকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে তিন দিন আটকে রাখা হয় এবং সেখানে আরও ৪/৫ জন তাকে পালা করে ধর্ষণ করে।

ওই নারী বাড়ি ফিরে স্বজনদের বিষয়টি জানালে ৫ সেপ্টেম্বর তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেই গৃহবধূর নিজেই বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ রাসেলকে আটক করে। কিন্তু মামলা নথিভুক্ত না করে পুলিশ ওই রাতেই রাসেলের সঙ্গে তার বিয়ের ব্যবস্থা করে বলে ওই নারীর অভিযোগ।