বন্যার উন্নতি শেরপুরে, জামালপুরে যমুনা বিপদসীমার উপরে

শেরপুরে ব্রহ্মপুত্রের পানি কমতে শুরু করলেও জামালপুরে যমুনার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

জামালপুর প্রতিনিধিশেরপুর ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2019, 07:16 AM
Updated : 26 July 2019, 08:39 AM

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে,গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি জামালাপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

এদিকে বন্যার কারণে জামালপুর-শেরপুর সড়ক দিয়ে আটদিন যান চলাচল বন্ধ থাকার পর শুক্রবার সকাল থেকে আবার শুরু হয়েছে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক গোলাম মোস্তফা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে ব্রহ্মপুত্র সেতু পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি কমে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে চরাঞ্চলের গ্রামীণ অনেক রাস্তাঘাট,ঘরবাড়ি ও ফসলের মাঠ এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।

শেরপুর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার ঘোষ জানান,বন্যার পানি কমে যাওয়ায় শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক সড়কের নন্দীর বাজার পোড়াদোকান এলাকা দিয়ে শুক্রবার ভোর থেকে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

এর আগে শেরপুর-জামালপুর সড়কে পোড়ার দোকান ও শিমুলতলি এলাকায় প্রবলবেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় গত শনিবার থেকে (১৮ জলাই ) সেখান দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

শেরপুর জেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়,বন্যায় শেরপুর জেলার ৫২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩০টি বন্যাকবলিত ইউনিয়নে কৃষি, মৎস্য, প্রাণীসম্পদ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, সড়ক যোগাযোগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমন বীজতলা, সবজি, আউশ আবাদ, পাট ও ফলবাগান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৩০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যাকবলিত বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।

এছাড়া বন্যার পানিতে ডুবে নয় শিশু ও বজ্রপাতে একজন জনসহ ১৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বন্যায় জেলার ২৮৫ হেক্টর সবজির ক্ষেত, ১ হাজার ১৫৫ হেক্টর রোপা আমন ধানের বীজতলা,পাট ৬০ হেক্টর এবং ৫৭৫ হেক্টর জমির আউস ধানের ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ৫০০ সম্পূর্ণ ঘরবাড়ি, দুই হাজার ২০৫টি আংশিক ঘরবাড়ি।

জেলা ত্রাণ শাখার সহকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানি ঢুকে পড়ার কারণে শেরপুরের ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি কলেজসহ মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে জেলা প্রশাসনের আওতায় ইতোমধ্যে মোট ১০৫ মেট্রিকটন চাল ও নগদ দেড় লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এসব এলাকায় ৫৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে বলে জানান তিনি।