গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে সব কাজের জন্য শিক্ষকদের ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
Published : 14 May 2019, 01:25 PM
‘প্রচুর কাজ করতে হয় বলে শিক্ষকরা খুশি হয়ে তাদের মিষ্টি খাওয়ার জন্য টাকা দেন’ দাবি করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান।
শিক্ষকদের অভিযোগ, টাকা না দিলে তাদের মাসের পর মাস হয়রানি করা হয়। বাধ্য হয়েই তারা টাকা দিয়ে কাজ করিয়ে নেন।
হয়রানির ভয়ে তারা নাম বলতে চাননি।
একাধিক প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, শিক্ষকদের বেতন-বিলের কাগজপত্র জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠাতে শিক্ষকপ্রতি ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। শিক্ষকের শূন্য পদের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতেও উপজেলা শিক্ষা অফিসে টাকা দিতে হয়।
উপজেলার হিজলবাড়ী বিনয়কৃষ্ণ উচ্চবিদ্যালয়ে নতুন নিয়োগ পাওয়া পাঁচ শিক্ষকের কাছ থেকে ৭০ হাজার, হিরণ পঞ্চপল্লী উচ্চবিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের কাছ থেকে ৪০ হাজার ও পোলসাইর ত্রিপল্লী উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষকের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে।
এছাড়া আরও অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে একই ধরনের অভিযোগ এসেছে।
একজন শিক্ষক বলেছেন, “আমি নতুন নিয়োগ পেয়েছি। আমার বেতন-বিলের কাগজ দেরিতে পাঠালে তিন মাসের বেতন ৪৮ হাজার টাকা পাব না। এই ভয় দেখিয়ে ওই অফিসের একজন সহকারী আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে বেতন-বিলের কাগজ জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়েছেন।
“সব কাজেই তাদের টাকা দিতে হয়। টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না। এখানে শিক্ষকরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন।”
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান প্রায় আট বছর ধরে এ উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন। তিনি অফিস ফাঁকি দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ আদায় নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ আছে।
উপজেলার অনেক প্রধান শিক্ষক এই শিক্ষা কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছেন।
তবে মাহাবুবুর রহমান সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “বেতন-বিল জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানোসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল কাজ রয়েছে। এসব কাজে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। অনেক কাগজ পাঠাতে হয়।
“এ কারণে অনেক শিক্ষক খুশি হয়েই অফিসের কর্মচারীদের মিষ্টি খেতে কিছু টাকা দিয়ে থাকেন। নানাবিধ কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি সার্বক্ষণিক অফিস করতে পারি না।”