গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলা চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ না করার অভিযোগ তুলে প্রশাসনের মঙ্গল শোভাযাত্রা পণ্ড করা হয়েছে। পরে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা বের করা হয়।
Published : 15 Apr 2019, 10:57 PM
রোববার পহেলা বৈশাখের আয়োজনে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পহেলা বৈশাখ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছিল সাদুল্যাপুর উপজেলা প্রশাসন। সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা, পান্তা ভাত খাওয়া, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। সেইমতো সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়।
সকাল ৮টায় ইউএনও রহিমা খাতুনের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ করার কথা ছিল।
শোভাযাত্রা বের করার আগে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহারিয়া খান বিপ্লব পরিষদ চত্বরে হাজির হন।
তারপর সাহারিয়া খান ও তার লোকজন ইউএনওকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ সময় অঘটনের আশঙ্কায় উপস্থিত লোকজন ছত্রভত্র হয়ে যায়। এক পর্যায়ে ইউএনও রহিমা খাতুনও পরিষদ চত্বর থেকে নিজের কার্যালয়ে গিয়ে বসেন। ফলে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ উপজেলা প্রশাসনের সকল আয়োজন পণ্ড হয়ে যায়।
পরে পান্তা ভাত ও অন্যান্য তৈরি খাবার আগত কিছু লোকজনকে খাওয়ানো হয়। অবশিষ্ট খাবার স্থানীয় এতিম খানায় দেওয়া হয়।
এদিকে, প্রশাসনের অনুষ্ঠান পণ্ড করে সকাল ৯টার দিকে পৃথক শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সাহারিয়া খানের নেতৃত্বে শোভ্রাযাত্রাটি শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জিল্লুর রহমান খন্দকার, মোজাহারুল হক প্রমুখ।
এছাড়া সন্ধ্যায় একই স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাদুল্যাপুর থানার ওসি আরশেদুল হক বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমি ছুটিতে ছিলাম। তবে শুনেছি উপজেলা প্রশাসন নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানকে বৈশাখী অনুষ্ঠানের দাওয়াত দেয়নি। এনিয়ে ইউএনওর সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া লোকজন চলে যায়।”
ফলে বৈশাখী উৎসবের মঙ্গল শোভাযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হয়নি বল জানান ওসি আরশেদুল।
এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বলেন, “ইউএনও সাহেব স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেননি। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবেও আমাকে দাওয়াত কিংবা কার্ড পাঠাননি।”
তিনি বলেন, “আমি গত ১০ এপ্রিল উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিয়েছি। এ হিসেবেও দাওয়াত পাইনি। উপজেলা চেয়ারম্যানদের গেজেট হয়েছে। কিন্তু গেজেটের বিষয়টি তিনি আমাকে জানাননি। এতে আমরা কী বুঝব? তিনি কোন আর্দশের মানুষ, বিএনপি না জামায়াতের। এসব কারণে আমরা বলেছি, ইউএনওকে বাদ দিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় দলের নেতাকর্মীরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করতে বাধা দেয়।”
একই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা খাতুনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথম দিকে তিনি ফোন ধরেননি। পরে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।