গোপালগঞ্জে ‘ধর্ষণের পর অপহৃত’ শিশু উদ্ধার

গোপালগঞ্জে ‘ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি’ এক শিশুকে ‘অপহরণের’ তিন দিন পর পুলিশ উদ্ধার করেছে।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2019, 01:18 PM
Updated : 13 April 2019, 01:18 PM

শনিবার সদর উপজেলার সাতপাড় গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই শিশুর এক স্বজনের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সদর উপজেলার ওই শিশু স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী।

তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, হাতিকাটা গ্রামের মধুময় বিশ্বাসের ছেলে মনোজ কুমার বিশ্বাস ওরফে মংলা মেয়েটিকে প্রইভেট পড়াত।

“গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ওই ছাত্রীকে সে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে।”

প্রধান শিক্ষক বলেন, বিষয়টি ওই ছাত্রী গত ৯ এপ্রিল ফাঁস করে দিলে তাকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণের আলামত ধ্বংস করতে দুর্গাপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার হাসান শেখের ভাই শাজাহান শেখ হাসপতাল থেকে কৌশলে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে।

পাশাপাশি মেম্বারের চাপে ওই ছাত্রীর মা-বাবা তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে অত্মগোপান করেন বলে প্রধান শিক্ষক জানান।

পরে প্রশাসনের অনুরোধে তিনি বাদী হয়ে গত ১০ এপ্রিল  গোপালগঞ্জ থানায় মনোজ ও শাহজাহানের নাম উল্লেখ করে আরও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা দায়ের করেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, দুর্গাপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড  মেম্বার হাসান শেখ কথিত ধর্ষক মনোজের পরিবারের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে। তারপর তার ভাইকে দিয়ে ওই ছাত্রীকে হাসপতাল থেকে অপহরণ করিয়েছে।

পাশাপাশি ইউপি মেম্বর ধর্ষক মনোজকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে বলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ।

হাসান শেখ এ ঘটনায় জড়িত নয় দাবি করে বলেন, “আমার ভাই শাহজাহান এ ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। এ কারণে গ্রামের লোকজন আমার নামও বলছে। প্রকৃতপক্ষে আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই।”

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার এস আই বকুল বলেন, ওই শিশুর দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে  গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপতালে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

এ ঘটনায় জড়িত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপতালের সহকারী পরিচালক ডা. অসিত মল্লিক বলেন, ৯ এপ্রিল বিকালে শিশুটি হাসপতালে ভর্তি হয়। ওয়ার্ডে আসার পর নার্সরা বেড ও ফাইল রেডি করতে রুমে যান।

“এ ফাঁকে শিশুটি কাউকে কিছু না বলে চলে যায়। পরদিন ডাক্তার ওয়ার্ডে রাউন্ডে গিয়ে বেডে রোগী না পেয়ে রোগী পাওয়া গেল না লিখে ফাইল ক্লোজ করে দেন।

“এটি সুকৌশলে হাসপাতাল থেকে অপহরণ কিনা আমার জানা নেই।”

রোগী ভর্তি হলেই তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে, বলেন অসিত।