ডিএনডি বাঁধের অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫৬০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
Published : 15 Oct 2017, 11:11 PM
ডিএনডি প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে রোববার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নাভানা ভুঁইয়া সিটি মাঠে আয়োজিত সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ডিএনডিবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ৫৬০ কোটি টাকার প্রকল্পে ৬ গুণ বেশি পানি নিষ্কাশন ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প হাউজ স্থাপন করা হবে।
ডিএনডিবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে আরও একটি পাম্প বিদেশ থেকে এনে লাগানোর ঘোষণা দেন এবং জলাবদ্ধা নিরসনে জনগণকে সহযোগিতার আহবান জানান তিনি।
“আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যত টাকা প্রয়োজন হবে তা দেওয়া হবে।”
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমরা ২০২০ সাল ধরা হলেও শামীম ওসমান বার বার ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার তাগিদ দিচ্ছেন বলে জানান মন্ত্রী।
“আমরা চেষ্টা করছি ২০১৯ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে এবং জনগণ যাতে তার সুফল পায়।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের যেসব জায়গা বেদখল হয়ে গেছে সেই জায়াগা ফেরত দিতে হবে। এজন্য যে জায়গা অধিগ্রহণ করতে হবে সেই অধিগ্রহণে সহায়তা করতে সবাইকে আহ্বান জানান আনিসুল।
“তা না হলে আমরা যতই বড় বড় পাম্প স্টেশন বসাই না কেন কোনো কাজে লাগবে না। আমি আপনাদের নেতাদের বলেছি ১০ জন লোকের ক্ষতি হতে পারে, কিন্তু ২০ লক্ষ লোকের ক্ষতি আমি হতে দেব না।
“এছাড়া ডিএনডির ভেতরে যেসব স্যুয়ারেজ লাইন ও ড্রেনেজ নারয়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রয়েছে সেগুলোর কাজ আমাদের সাথে সমন্বিতভাবে করতে মেয়রদের বলব।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আগে একসাথে একটি প্রজেক্টে ৫৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা চিন্তা করত না; কিন্তু আজ দিতে পারছে। কারণ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নতি হচ্ছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম বিরু, স্থানীয় সাংসদ একেএম শামীম ওসমান, আবু হোসেন বাবলা, সাংসদ সানজিদা খাতুন, হোসনে আরা বাবলী, লিয়াকত হোসেন খোকা, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মুহাম্মদ শহীদ বাদল প্রমুখ।
“আমি জাতীয় সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রীকে বলেছিলাম হয় এই প্রজেক্ট গ্রহণ করতে হবে, না হলে শামীম ওসমান এই সংসদে বসতে পারে না। আমি যদি আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের সমস্যা সমাধান না করতে পারি আমি মনে করি না সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা আছে।”
শামীম ওসমান পানিসম্পদ মন্ত্রী ও প্রতি মন্ত্রীকে প্রকল্পের কাজ চলাকালে দুই তিন বার এলাকায় ঘুরে যাওয়ার আহ্বান জানান। তাহলে কাজ তরান্বিত হবে বলে তিনি মনে করেন।
শামীম ওসমান জানান, ফতুল্লায় শত শত কোটি টাকার রাস্তাঘাট করেছি, স্কুল কলেজের টাকা চলে এসেছে। ডিসেম্বরে কাজ শুরু হবে। ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের চার লেনের কাজ শুরু হবে। তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে ডাবল রেললাইনের কাজ শুরু হবে। দুইশ কোটি টাকা ব্যয়ে চাষাঢ়া থেকে আদমজী রেললাইনের জায়গায় রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন, “প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম সাহেব আমার পাশের এলাকার মানুষ। এলাকার মানুষকে বললে এক লাখ মানুষ মাটি কোপাইয়ে দিবে। কিন্তু আগামী বর্ষা মৌসুমে আমরা পানিতে ডুইবা থাকতে পারব না। যদি বলেন লেবার দেও, লেবার দিবে। যদি লোক চান এক লক্ষ লোক কোদাল নিয়ে আসবে। কিন্তু পচা পানিতে আমার এলাকার মা বোনকে আর পানিতে পা ডুবাতে দিব না।”