বঙ্গোপসাগরের মোহনায় চিংড়ি পোনা আহরণকালে নারী-শিশুদের পিটুনি দিয়ে কোস্টগার্ডের তুলে নিয়ে যাওয়া এক নারী নিখোঁজ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
Published : 30 Mar 2016, 03:25 PM
ওই সময় কোস্টগার্ডের পিটুনিতে দুই অন্তত দুই নারী ও এক শিশু আহত হয়েছে।
তবে কোস্টগার্ড দাবি করছে, এক নারীকে তাদের ট্রলারে তুলে নিয়ে যাওয়ার কিছু সময় আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সকালে বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
পিটুনিতে আহত দুই নারী হলেন কদবানু (৪৫) ও জবেদা বেগম (৩৫)। তাদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সফিকুল ইসলাম রুবেল সাংবাদিকদের বলেন, বেলা ১১টার দিকে তেঁতুলবাড়িয়া এলাকায় সাগরমোহনায় পায়রা নদীতে নারী ও শিশুরা কারেন্ট জাল দিয়ে চিংড়ি পোনা শিকার করছিলেন।
“ওই সময় ফকিরহাট ক্যাম্পের কোস্টগার্ড সদস্যরা এসে নারী-শিশুদের লাঠিপেটা করে কারেন্ট জাল ছিনিয়ে নিতে থাকে।”
পিটুনিতে আহত হয়ে কদবানু ও তার ছেলে রাসেলকে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যেতে দেখেছেন বলে সফিকুল ইসলাম রুবেল জানান।
রুবেল বলেন, এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে চিৎকার শুরু করলে জবেদা বেগম ও তার বোনের মেয়ে আসমাকে কোস্টগার্ড সদস্যরা তাদের ট্রলারে তুলে দ্রুত চলে যায়।
“তেঁতুলবাড়িয়া থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নিদ্রার চরে জবেদা বেগমকে পাওয়া গেলেও আসমার কোনো খোঁজ মেলেনি।”
জবেদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, কোস্টগার্ড সদস্যরা তাকে ট্রলারে ওঠানোর পরে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। জ্ঞান ফেরার পর তাকে নিদ্রার চরে নামিয়ে দেওয়া হয়।
তার বোনের মেয়ে আসমা বেগম কোথায় আছেন তা তিনি বলতে পারছেন না।
কোস্টগার্ড ফকিরহাট ক্যাম্পের স্টেশন কমান্ডার শামীম বলেন, অবৈধ কারেন্ট জাল উদ্ধার করতে গেলে নারী ও শিশুরা তাদের উপর হামলা চালায়।
এ সময় তারা ‘আত্মরক্ষার্থে লাঠি ও বাঁশ দিয়ে পাল্টা হামলা’ করেন বলে দাবি তার।
তিনি বলেন, জবেদা বেগম জাল ফেরত নেওয়ার জন্য তাদের ট্রলারে উঠে গিয়েছিলেন। পরে তাকে নিদ্রার চরে নামিয়ে দিয়েছেন।
তবে আসমা বেগমকে তাদের ট্রলারে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কমান্ডার শামীম।
নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ সদস্য সেলিম মিয়া বলেন, দুই নারীকে কোস্টগার্ডের ট্রলারে উঠিয়ে নিতে দেখেছেন তিনি।
নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম মাতুব্বর বলেন, তিনি কদবানু ও জবেদা বেগমকে আহত অবস্থায় প্রথমে তালতলী থানা ও পরে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছেন।
পরে অবস্থার অবনতি হলে তালতলী থেকে তাদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।
তালতলী থানার ওসি বাবুল আক্তার বলেন, থানায় নেওয়ার পর ওই দুই নারীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এখনও ওই ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।