ফরিদপুরে কিশোরীর বাবাকে পিটুনি, মামলায় ছাত্রলীগ নেতা

পুলিশ জানিয়েছে, আদালত ওই কিশোরীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছে; আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2023, 07:11 PM
Updated : 12 March 2023, 07:11 PM

ফরিদপুরের সালথায় কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্তের জেরে মেয়েটির বাবা ও চাচাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।  

শনিবার ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে সালথা থানায় মামলাটি দায়ের করেন বলে সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল জানান। 

মামলার আসামিরা হলেন সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন রায় (২৮), তার চার সহযোগী বিজয় সরকার (২৫), মিঠু সরকার (২৫), শামিম শেখ (২৪) ও  সুব্রত সরকার (২৫)। 

এ ছাড়া অজ্ঞানামা আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Also Read: ‘উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ’, কিশোরীর বাবাকে পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগনেতার বিরুদ্ধে

আসামিরা সবাই উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের সাড়ুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। 

মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদীর মেয়েকে বিভিন্ন সময় পথেঘাটে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিসহ কুপ্রস্তাব দিতেন রায়মোহন। মেয়েটি এ কথা পরিবারের সদস্যদের জানালে রায়মোহন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ও তাদের পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকেন। 

মামলায় আরও বলা হয়, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাদীর মেয়েকে বাড়ির পাশে পেয়ে রায়মোহন প্রেমের প্রস্তাব দিলে সে তা অস্বীকার করে। তখন রায়মোহন মেয়ের হাত ধরে টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। 

মেয়ের চিৎকারে বাদীসহ পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে গেলে আসামিরা রামদা, ছেনদা, হাতুড়ি, বাঁশের লাঠি, লোহার রডসহ নানা অস্ত্রসহ বাদীর স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালিগাল করেন।  

“তখন রায়মোহন ও তার সহযোগীরা আমার [বাদী] স্বামীসহ ভাশুর ও ভাতিজাকে এলোপাথারি বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারপিট করে আহত করে। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।” 

এজাহারে আরও বলা হয়, বাদীর স্বামী ও ভাশুরকে সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রথমিক চিকিৎসা দেন। ভাশুরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসক তাকে  ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থনান্তর করেন। 

পুলিশ জানায়, যৌন পীড়নসহ বে-আইনি জনতাবদ্ধে গতিরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে সাধারণ ও গুরুতর জখমসহ হুমকি ও হুকুম দেওয়ার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় এ মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। 

সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) আসাদুজ্জামান শাকিল জানান, শনিবার দুপুরে আদালত ওই কিশোরীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। 

এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের এক সহ-সভাপতিকে আহ্বায়ক এবং এক  যুগ্ম-সম্পাদক ও এক সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।