‘উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ’, কিশোরীর বাবাকে পেটানোর অভিযোগ ছাত্রলীগনেতার বিরুদ্ধে

অভিযোগে বলা হয়, স্কুলে পড়ার সময় থেকে ওই কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন মোহন; কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্নভাবে হমকি প্রদানসহ হয়রানি শুরু করেন।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2023, 03:20 PM
Updated : 10 March 2023, 03:20 PM

ফরিদপুরের সালথায় উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এক কিশোরীর বাবা ও চাচাকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ছাত্রলীগনেতার বিরুদ্ধে।

সালথা থানার ওসি শেখ সাদিক জানান, শুক্রবার উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কিশোরীর বাবা (৪৯) ও চাচাকে (৫৩) আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিষয়টি থানায় জানানো হয়েছে বলে ওসি শেখ সাদিক জানিয়েছেন।

ওই কিশোরীর চাচাত ভাই বলেন, তার বোনের বয়স ১৭; মেধাবী। স্থানীয় একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বর্তমানে ফরিদপুর শহরে ছাত্রীনিবাসে থেকে একটি সরকারি কালেজে পাড়াশোনা করছেন।

কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা জানান, সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আটঘর ইউনিয়নের সারুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা রায় মোহন কুমার রায় (২৮) স্কুলে পড়াকালীন ওই কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর মোহন ওই কিশোরীকে হোস্টেল থেকে তুলে নেওয়াসহ বিভিন্নভাবে হমকি প্রদানসহ হয়রানি শুরু করেন।

অভিযোগে বলা হয়, এ বিষয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গৌড়দিয়া রায় মোহনের সঙ্গে ও মেয়েটির বাবার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রায় মোহন মেয়েটির বাবাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি আহত হন। এ খবর পেয়ে মেয়েটির চাচা তার ছেলেসহ সেখানে গেলে রায় মোহনসহ ১০-১২ জন তাদের উপর হামলা করে। এতে কিশোরীর বাবা, চাচা ও এক চাচাত ভাই আহত হন। এদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে যায়।

আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বাবা ও চাচাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গৌড়দিয়া গ্রামটি আটঘর ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্কাস মাতুব্বর বলেন, ওই কিশোরী স্কুলে পড়া অবস্থাতেই রায় মোহন তাকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। এ নিয়ে বিদ্যালয়ে একবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। ওই কিশোরী কলেজে ভর্তি হওয়ার পর রায় মোহন উত্ত্যক্তের পাশাপাশি তাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

সালথা থানার ওসি শেখ সাদিক বলেন, “চার-পাঁচ বছর ধরে রায় মোহন ওই কিশোরীর পিছনে প্রেমের প্রস্তাব নিয়ে ঘুরে যাচ্ছিল। কিন্তু কিশোরীটি তাকে পাত্তা দেয় না। এ নিয়ে শুক্রবার এক সালিশে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কিশোরীর বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাই আহত হয়। অভিযোগে শুনেছি রায় মোহনের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়েছে।”

ওসি বলেন, আহতদের চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায় মোহন কুমার রায় বলেন, “ওই কিশোরীর সঙ্গে আমার চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দুই মাস আগে ভেঙে যায়। আমি নাকি ওই মেয়েকে হুকমি দিচ্ছি। এ কথা ওই পরিবারের সদস্যরা বলে বেড়াচ্ছিল। এ জন্য আমি ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ তনয় বোসের বাড়িতে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলি। মেয়েটির বাবা আমাকে মারপিট করে। পরে তার ভাই ও ভাতিজা আমাকে মারপিট করে।”

তবে মেয়ের বাবা বা চাচকে তিনি মারেননি বলে দাবি করেন।