হবিগঞ্জের হাকিম আদালত মামলা নথিভুক্ত করতে বাহুবল মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
Published : 13 Mar 2025, 11:43 PM
হবিগঞ্জের বাহুবলে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের পরে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
৯ মার্চ বাহুবলের রামাকাশি ইউনিয়নের যমুনাবাগ গ্রামে তাকে নির্যাতন করার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
নির্যাতনের শিকার জাহেদ মিয়া (২৮) হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বনদক্ষিণ গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় দর্জি।
বৃহস্পতিবার জাহেদ মিয়া হবিগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে ১৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
আসামির তালিকায় বনদক্ষিণ গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ, আবদুল মালিক, ছালিক মিয়া, মোজাহিদ মিয়া, আমীর আলী, আলমগীর, যমুনাবাগ গ্রামের রুয়েল মিয়া, সোহেল মিয়া, কবির মিয়া, কাজল মিয়া, তাজল মিয়া, সুমন মিয়া ও জামাল মিয়ার নাম রয়েছে।
বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিকালে উপজেলার কটিয়াদি বাজার থেকে আমির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের বলেন, ৮ মার্চ যমুনাবাগ গ্রামের আবদুল কাইয়ুমের বাড়ি থেকে দুটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এরপর সন্দেভাজন হিসেবে একই উপজেলার তারাপাশা গ্রামের কিম্মত আলীর ছেলে শহীদুল মিয়াকে (৩০) আটক করে পেটানো হয়।
তারা বলেন, পরে ৯ মার্চ পাশের সদর উপজেলার বনদক্ষিণ গ্রামের জাহেদ মিয়াকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং এক পর্যায়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার শরীরে পেট্রল দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় চুরির দায় স্বীকার করতে চাপ দেওয়া হলে জাহেদ তা অস্বীকৃতি জানান।
স্থানীয় লোকজন বলেন, জাহেদের বারবার আকুতিতেও নির্যাতনকারীদের মন টলেনি। এক পর্যায়ে তার পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনের দাম দিয়ে দেওয়ার শর্তে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অনুজকান্তি দাস সাংবাদিকদের বলেন, জাহেদের শরীরের প্রায় ১৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে।
আদালতে জাহেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমারে মোবাইলে কল দিয়ে ডেকে নিয়ে মেহগনিগাছের সাথে বাইন্দ্যা (বেঁধে) মারছে। শরীরে আগুন লাগাইয়া দেওয়া হইয়াছে। পরে আমার দাদা সব টাকা দেওয়ার কথা বলে ছাড়িয়ে নিয়েছেন।’
তার আইনজীবী কুতুব উদ্দিন জুয়েল বলেন, “জাহেদকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, তা নজিরবিহীন।”
ওসি জাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফেইসবুকে ঘটনাটি দেখেছি। পরে জানতে পেরেছি আদালতে মামলা হয়েছে।”