বাজেটে নগরের অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনসহ উন্নয়ন খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়।
Published : 01 Jul 2024, 12:19 AM
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে (কুসিক) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য হাজার কোটি টাকার বেশি বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। যা ২০১১ সালে এই সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর সর্বোচ্চ বাজেট।
রোববার দুপুরে নগর ভবনের অতীন্দ্র মোহন রায় সম্মেলন কক্ষে ১ হাজার ৪৪ কোটি ৫০ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪৬৪ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনা।
পরে বাজেটের বিস্তারিত উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষক মো.মাসুদুর রহমান।
তিনি জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৭৯ কোটি ৪২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ও অনুদান আয় ধরা হয়েছে ৮৩৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এছাড়া প্রারম্ভিক তহবিল দেখানো হয়েছে ১২৯ কোটি ৫৩ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬৪ টাকা।
এদিকে, এবারের বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫৮ কোটি ৮৬ লাখ ৫৯ হাজার ৭৮৩ টাকা। আর সমাপনী তহবিল দেখানো হয়েছে ৩১ কোটি ১৩ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৮১ টাকা।
এবারের বাজেটে নগরের অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনসহ উন্নয়ন খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশকনিধন, পানি সরবরাহ, বৃক্ষরোপনসহ সব খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে বেতন-ভাতা খাতেও।
চলতি বছরের ৮ এপ্রিল উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব গ্রহণের পর মেয়র তাহসীন বাহার সূচনার প্রথম বাজেট এটি। অতীতের সব বাজেটের চেয়ে এবারের বাজেটের আকারও বেড়েছে।
এর আগের মেয়র প্রয়াত আরফানুল হক রিফাতের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ছিল ৭১৮ কোটি ২১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ছিল ৩৪৪ কোটি ১২ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬৩ টাকা।
বাজেট ঘোষণাকালে সিটি মেয়র সূচনা জানান, প্রস্তাবিত বাজেটে সিটি করপোরেশন এলাকার ভবন মালিকদের ওপর বাড়তি কর আরোপ করা হয়নি। উন্নয়ন অনুদান ও নিজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করে এই বাজেট দেওয়া হয়েছে। বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয় উন্নয়ন খাতে।
তিনি বলেন, “ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরেই গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন কুমিল্লা। জাইকাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কুমিল্লার উন্নয়নে কাজ করতে চান। আমরা তীব্র গতিতে কাজ শুরু করেছি। এর মধ্যে কুমিল্লার মানুষ এর সুফল ভোগ করছেন।”
তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করেছি, খালগুলো পরিষ্কার করেছি। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতেও কুমিল্লার কোথাও তেমন জলাবদ্ধতা তৈরি হয়নি। এমন ঘটনা নজিরবিহীন।
কুমিল্লার মানুষ সেবা পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন দাবি করে সিটি মেয়র বলেন, যানজট, জলজট নিরসনে আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হচ্ছি। যানজট নিরসনে অবৈধ পরিবহনের প্রতি ব্যবস্থা, ফুটপাত দখলমুক্ত করতে জোরালোভাবে কাজ করছি।
নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনে কাজ করছি। প্রস্তাবিত বাজেটে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি সড়ক বিভাজকে বৃক্ষরোপণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে নগরীকে দূষণমুক্ত রাখতে কাজ করা হবে।
মেয়ের বলেন, নগরীর মানুষ গণশৌচাগার সঙ্কটে দুর্ভোগে পড়েন। নারীরা ঝামেলায় পড়েন বেশি। আমাদের পর্যাপ্ত জায়গাও নেই। নগরীর পরিত্যক্ত ভবন উচ্ছেদ করে সেখানকার আন্ডারগ্রাউন্ডে গণশৌচাগার করার প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।
সেবাকে ত্বরান্বিত করতে লোকবল বাড়ানো হবে। শিক্ষার প্রসার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে কাজ করা হবে বলেও জানান মেয়র।
বাজেট ঘোষণার সময় সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র হাবিবুর আল আমিন সাদী, মো. মঞ্জুর কাদের মনি, কাউছারা বেগম সুমিসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।