টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচর থেকে ১০ জন এবং নাফনদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ৯ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।
Published : 20 Feb 2025, 08:45 PM
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদী থেকে আবারও মাছ ধরার চারটি নৌকাসহ ১৯ মাঝিমাল্লাকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচর থেকে ১০ জন এবং নাফনদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ৯ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বোটমালিকরা।
টেকনাফ-কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল জলিল বলেন, ‘টেকনাফের ফেরার পথে আজকেও আমাদের ঘাটের মাছ ধরার দুটি ট্রলারসহ ৯ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমার। এর আগে ধরে নিয়ে যাওয়া ৬ জেলেকে এখনো ছেড়ে দেয়নি।
“তার উপর বারবার এ ধরনের ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত এটি সমাধানে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি আমরা।”
অন্যদিকে শাহপরীর দ্বীপ মাঝারপাড়া নৌঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুর গফুর বলেন, মাঝপাড়া ঘাটের দুটি নৌকাসহ ১০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি।
তিনি বলেন, তার ঘাটের মো. কালাইয়া এবং জাফর আলমের মালিকাধীন দুটি নৌকা নিয়ে নাফনদীতে মাছ শিকারে যায় জেলেরা। বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের আরাকান আর্মি সদস্যরা জেলেদের ধাওয়া করে তাদের ধরে নিয়ে যায়।
এতে জেলে-নৌকা মালিকসহ ঘাটের সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান তিনি।
ধরে নেওয়া জেলেদের মধ্যে ১০ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- মো. কালা মিয়া (৩৭), মো. নুরুল আলম (৩৯), আব্দুল রহমান (১৯), মো. আ. কালাম আহমেদ (২৯), মো. লাইল্যা (১১), মো. কবির আহমেদ (৪৩), মোহাম্মদ ইউনুছ (২৩), নুরুল ইসলাম (৩৪), মো. লুতফর রহমান (২৩), রহিম উল্লাহ(২১)।
বাকি ৯ জনের নাম এখনও পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মো. তারেক উর রহমান বলেন, “প্রায় সময় জেলেদের মিয়ানমারে ধরে নিয়ে ঘটনা ঘটছে। এতে আমরা খুব চিন্তিত। কেননা এটি সমাধান না হলে জেলেরা মাছ শিকারে যাবে না।”
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি নাফ নদীর মোহনা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া চার বাংলাদেশি জেলেকে এখনও ছাড়েনি আরাকান আর্মি ।
এছাড়া গত বছর ৬ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ছয়টি মাছ ধরার ট্রলারসহ ৫৮ জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান। ৯ অক্টোবর তাদের অপহরণ করে সে দেশের নৌবাহিনী।
এ সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত একটি স্পিড বোট থেকে বাংলাদেশি একটি ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তাতে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হলে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে জেলেদের ফেরত দেওয়া হয়।
তখন এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল।
এ ছাড়া সব শেষ ১৫ অক্টোবর আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা বাংলাদেশি ১৬ জেলেকে ফেরত এনেছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি এই মাত্র শুনেছি। এ ঘটনায় বিজিবির সঙ্গে আলোচনা করে তাদের দ্রুত ফেরত আনার চেষ্টা চালানো হবে।”
পুরানো খবর