এই মামলায় আসামি ছিলেন ৩৪ জন। তাদের মধ্যে আট জন দীর্ঘ সময় ধরে চলা মামলার মধ্যে মারা গেছেন।
Published : 09 Sep 2024, 08:30 PM
নওগাঁয় ২৬ বছর আগের এক হত্যা মামলায় ২৬ আসামির বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. মোখলেছুর রহমান এই রায় দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) শামসুর রহমান।
পিপি শামসুর জানান, ১৯৯৮ সালে জমিজমা নিয়ে বিরোধে মান্দা উপজেলার ভরট্ট শিবনগর গ্রামে এক কৃষকের মৃত্যুতে করা এই মামলায় আসামি ছিলেন ৩৪ জন।
দীর্ঘ সময় ধরে চলা মামলার মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন আট আসামি। সোমবার রায় ঘোষণার সময় ২২ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন, চারজন পলাতক। আসামিরা সবাই ভরট্ট শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেহের আলীর ছেলে মনছুর আলী, আজিমুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে আলতাব হোসেন মণ্ডল, সাহেব আলী মণ্ডলের ছেলে এনামুল হক, মনছুর রহমানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, তবির আলীর ৩ ছেলে- ফজের আলী, ফজলুর রহমান, কাদের আলী, শাহজাহান আলীর ছেলে জবেদ আলী, ময়েজ উদ্দিনের ছেলে কাজেমুদ্দিন, তয়েজ উদ্দিনের ছেলে অহিদুল ইসলাম (রহিদুল), রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে আছিব উদ্দিন।
আরও দণ্ড পেয়েছেন, নুরুল ইসলামের ছেলে আনিছার রহমান, তবীর আলীর ছেলে মোখলেছুর রহমান, জেহের আলী মণ্ডলের ছেলে কাশেম আলী মণ্ডল, এনায়েত আলী প্রামাণিকের ছেলে লিয়াকত আলী প্রামাণিক, শাহজাহান আলীর ছেলে মোখলেছুর রহমান, মফিজ উদ্দিনের ছেলে জালালউদ্দিন, তবীর আলীর ছেলে মোজাহার আলী ওরফে মোজাফ্ফর আলী, মৃত হাজী সমির উদ্দিনের ছেলে শাহাজাহান।
এছাড়া তয়েজ উদ্দিনের ছেলে ছাইদুর রহমান, মনসুর আলী প্রামাণিকের ছেলে পৈক্যা (বুলু), মেরেজ আলী মৃধার ছেলে আজাদ আলী মৃধা, আশরাফুল মৃধা, মহির উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে কলিমুদ্দিন মণ্ডল, তবির আলী প্রামাণিকের ছেলে পটল ওরফে পরশ উল্যা প্রামাণিক এবং তকীমুদ্দিনের ছেলে গুল মাসুদ ওরফে কালুকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে মোখলেছুর রহমান, এনামুল হক, আনিছুর রহমান ও মোজাহার আলী পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় ভরট্ট শিবনগর গ্রামের আজিম উদ্দিন (৫৫) বিবাদমান জমিতে চাষ দেওয়ার জন্য গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন লাঠিসোটা, হাসুয়া নিয়ে তার উপর হামলা চালায়।
এ হামলায় আজিম উদ্দিন মারা গেলে তার ছেলে মো. আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দীর্ঘ সময় ধরে মামলা চলাকালে যারা মারা গেছেন তাদের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়।
২৬ বছর পরে সোমবার দুপুরে মামলার শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২ ও ৩৪ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক বেঁচে থাকা ২৬ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।
একইসঙ্গে প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেছেন বিচারক।
এর মধ্যে আসামিদের হাজতবাসের সময় ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ ধারা অনুযায়ী সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে বলেও রায়ে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম-১ মামলাটি পরিচালনা করেন।