৫ অগাস্ট নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন হাফেজ সোলাইমান।
Published : 09 Dec 2024, 08:04 PM
নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত এক মাদরাসা ছাত্রের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তুলতে বাধা দিয়েছেন পরিবার। ফলে লাশ উত্তোলন না করেই ফিরে গেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানীনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জেলার নির্বাহী হাকিম তামশিদ ইরাম খান জানান।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, বেলা ১১টার দিকে মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির একটি দল মাদানীনগর মাদরাসার পাশে স্থানীয় কবরস্থানে যান। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম তামশিদ ইরাম খানের উপস্থিতিতে কবর খুড়তে গেলে তাতে বাধা দেন মামলার বাদী।
এ সময় স্থানীয় মাদরাসার ছাত্র ও হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরাও ছিলেন। তাদের বাধায় লাশ উত্তোলন না করেই কর্মকর্তারা বেলা দেড়টার দিকে সেখান থেকে চলে যান।
৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে আগে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর গুলিবিদ্ধ হন ১৯ বছর বয়সী হাফেজ সোলাইমান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে সিদ্ধিরগঞ্জের মাদানীনগর মাদরাসার পাশে কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নির্বাহী হাকিম তামশিদ ইরাম খান বলেন, “আদালতের আদেশে আমরা মরদেহ উত্তোলন করতে চাইলে মামলার বাদী শামীম কবির তাতে আপত্তি জানান। নিহতের পরিবারের লোকজন ধর্মীয় অনুভূতির জায়গা থেকে মরদেহ তুলতে দিতে চান না।
“আমরা তাদের মামলার তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্ত করতে হবে বলে জানালেও তারা তাতে রাজি হননি। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন সেখানে তৈরি না হয়, সেজন্য আমরা সেখান থেকে চলে আসি।”
এই দফায় ব্যর্থ হলেও মরদেহ উত্তোলনের জন্য পরবর্তীতে তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সিআইডির পরিদর্শক হাসিনা বেগম বলেন, “দাফনের আগে ময়নাতদন্ত করা হয়নি। মামলার তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্ত করতে হবে। কিন্তু মরদেহ না তোলার জন্য আদালতে বাদীপক্ষ আবেদন করবে বলে জানিয়েছে। আদালত থেকে যদি অন্য কোনো নির্দেশনা আসে সেক্ষেত্রে ওই নির্দেশনা মেনে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাব।”
জানতে চাইলে মামলার বাদী ও নিহতের ভগ্নিপতি শামীম কবির বলেন, “আমরা পুলিশকে আগেই জানিয়েছি, যদি মরদেহ উত্তোলন ছাড়া কিছু হয় তাহলে আমরা রাজি আছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মরদেহ উত্তোলন ছাড়া সম্ভব না। নিহতের বাবা-মা অর্থাৎ আমার শ্বশুর-শাশুড়ি কোনোভাবেই মরদেহ উত্তোলনের পক্ষে না। প্রয়োজনে আমরা মামলা তুলে নেব।”
এদিকে, ঘটনাস্থলে থাকা হেফাজতে ইসলামের মহানগর কমিটির সাবেক সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, নিহত সোলাইমান হেফাজতে ইসলামের কর্মী ছিলেন। তার পরিবারের লোকজনের আহ্বানে তারা কবরস্থানে গিয়েছিলেন।
সোলাইমান নিহতের ঘটনায় ২২ অগাস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন শামীম কবির। মামলার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়।