বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পথ চলতে চাই: কাদের সিদ্দিকী

১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্ত্র জমা দিয়েছিলেন কাদেরিয়া বাহিনীর সদস্যরা।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2023, 06:08 PM
Updated : 24 Jan 2023, 06:08 PM

সারাজীবন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে পথ চলতে চান বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদের সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার টাঙ্গাইলে এক অনুষ্ঠানে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “বাংলার বাপ একটাই। বাংলার বাপ ২, ৩, ৪টা নয়, তিনি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পথ চলতে চাই।”

১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদানের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনা সভায় তিনি বক্তব্য দেন।  

কাদের সিদ্দিকী বলেন, “জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ সবাই জয় বাংলা বলবে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর আমি এতিম হয়েছি। আমার বোনের কী ক্ষতি হয়েছে সেটা জানি না। তবে আমার, আমার ভাই ও পরিবারের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে।” 

গত ১৩-১৪ বছরে বাংলাদেশে ‘অনেক লুটপাট’ হয়েছে মন্তব্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “কিন্তু সরকারি উদ্যোগে টাঙ্গাইলে কোনো মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র হয়নি। এ ছাড়া নেই আমাদের অস্ত্র জমা দেওয়ারও স্মৃতি চিহ্ন। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে যে অস্ত্র জমা দিয়েছিলাম, তা নতুন প্রজন্ম জানেই না।”

সেই স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতিস্তম্ভ করার জন্য সভায় উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হকের প্রতি দাবি করেন কাদের সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, “আমার বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীকে দেখে রাজনীতি শিখেছি। আর রাজনীতি থেকে দেশপ্রেম শিখেছি। তাই সকলকে দেশ প্রেমিক ও দেশের স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানাই।”

কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদান উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, কাদের সিদ্দিকী ইতিহাসের গর্বিত সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের মহামানব। তার বীরত্বগাথা ইতিহাসে বিরল। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে তিনি এক লাখ চার হাজার অস্ত্র বঙ্গবন্ধুর কাছে জমা দিয়েছিলেন। এটি একটি বিষ্ময়। বাংলাদেশ সৃষ্টিতে কাদেরিয়া বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, “বাঘ বুড়ো হয়, কিন্তু তার থাবা বুড়ো হয় না। বয়স আমাদের হতে পারে। এই ৫২ বছরে আমরা সেই ২৫/২৬ বছরের টকবগে যুবক নই। তাই ঘোলা পানিতে কেউ মাছ শিকারের চেষ্টা করবেন না।”

জাতীয়ভাবে দিনটিকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে অস্ত্র লুট করে মুক্তিযোদ্ধাদের সরবরাহ করছে। সেই অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে।

“কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা আমার চেয়েও সাহসী ছিলেন।”

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসও উপস্থিত ছিলেন।

কাদের সিদ্দিকীকে বঙ্গবন্ধুর ‘স্বার্থক আদর্শিক পুত্র’ অবহিত করে তিনি বলেন, “আসুন আমরাও আপনাকে নিয়ে পথ চলতে চাই। ২৪ সালে যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচনে এক বৃত্তে থাকবেন মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীরা। স্বার্থক পিতার স্বার্থক উত্তরসূরি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়ব।”

কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদান দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আবু মোহাম্মদ এনায়েত করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি বুলবুল খান মাহবুব, কবি আল মুজাহিদী, আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিনী নাসরিন সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম চাকলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ ও হাবিবুর রহমান তালুকদারও বক্তব্য দেন।