রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সুইপার ছিলেন তিনি।
Published : 04 Dec 2023, 05:25 PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; যিনি ঋণের অর্থ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বলে তার স্ত্রী দাবি করেছেন।
সোমবার সকাল ৮টার দিকে নগরীর রাজপাড়া থানার লক্ষ্মীপুর বাকির মোড় এলাকায় হরিজন পল্লীর বাসার বাথরুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয় বলে রাজপাড়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
মৃত ৪৫ বছর বয়সী রাজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সুইপার ছিলেন।
রাজনের স্ত্রী রাখি রাণী জানান, তার স্বামী ‘মানব সেবা উন্নয়ন’ নামে একটি এনজিও থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন। এর জন্য প্রতিমাসে তাকে দশ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হতো। সোমবার কিস্তি দেওয়ার দিন ছিল। সেটা মিলিয়ে আরও সাতটি কিস্তি বাকি থাকলেও রাজনের হাতে কোনো টাকা ছিল না।
আইডি বাগানপাড়া এলাকার একরাম আলীর ছেলে সাদি নামের এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও দুই লাখ টাকা ঋণ নেন রাজন। সুদ ও আসল মিলে সাদিকে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করেন রাজন। কিন্তু সাদি আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করায় রাজন তাকে ৩০ হাজার টাকা জোগাড় করে দেন।
রোববার রাতে সাদি ও তার ভাই রকি রাজনকে ফোন করে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করে। না দিলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেয় বলেও জানান রাখি।
তিনি বলেন, “সকালে রাজন বাথরুমে ঢোকার পর অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কোনো সাড়া মিলছিল না। পরে দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে।”
এনজিও আর দাদন ব্যবসায়ীর চাপে রাজন ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে দাবি তার স্ত্রীর।
রাজপাড়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “রাজন বাড়ি করার জন্য সুদের ভিত্তিতে একটি এনজিওসহ ‘কয়েকজনের’ কাছ থেকে ৫-৬ লাখ টাকা ঋণ নেন। পাওনাদাররা চাপ দেওয়ার কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”
তবে এর পেছেনে আরও কোনো কারণ আছে কি-না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে রাজনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুরে লক্ষ্মীপুর মোড়ে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন হরিজন পল্লীবাসী। দাদন ব্যবসায়ী সাদিকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।