বৃহস্পতিবার বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয় বলে বাদীর আইনজীবী জানান।
Published : 17 Apr 2025, 09:46 PM
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজেকে মেয়র ঘোষণা চেয়ে মামলা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
বৃহস্পতিবার বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে তিনি মামলাটি করেন বলেন তার আইনজীবী শেখ আব্দুল্লাহ নাসির জানান।
আব্দুল্লাহ নাসির বলেন, মামলায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে প্রধান বিবাদী করা হয়েছে।
অন্য বিবাদীরা হলেন- জাকের পার্টির মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চু, স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন হাওলাদার, আসাদুজ্জামান, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান।
আইনজীবী শেখ আব্দুল্লাহ নাসির বলেন, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বে থাকা বরিশাল সদর জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ মো. হাসিবুল হাসান মামলাটি গ্রহন করেছেন। তবে কোনো আদেশ দেননি।
মামলার নথির বরাতে আইনজীবী আরো বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে বাদী সৈয়দ মুহম্মাদ ফয়জুল করীম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নির্বাচনটি হামলা-পাল্টা হামলা ও উত্তেজনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভোটের দিন প্রার্থী নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেরা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান।
সেখানে খোকন সেরনিয়াবাতের কর্মী-সমর্থকরা হামলা চালিয়ে প্রার্থী ফয়জুল করিমকে রক্তাক্ত জখমসহ ১০ জনকে আহত করেন।
জাগুয়া কলেজ কেন্দ্রের হাতপাখা প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়।
মামলার এজাহারে আরো বলা হয়েছে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের অনুগত লোকজন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নগরীতে প্রবেশ করে বেআইনি কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট দেখিয়ে নির্বাচিত ও মুফতি ফয়জুল করীমকে ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট দেখিয়ে পরাজিত করা হয়েছে।
বাদী তার মামলার এজাহারে দাবি করেন, ভোটাররা সঠিকভাবে ভোট দিতে পারলে বাদী ‘ব্যাপক ভোটে’ জয়লাভ করতেন।
তিনি আরো দাবি করেন, এ ঘটনায় ভোটের দিন প্রার্থী নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিলের অনুরোধ করেন।
আবেদন গ্রহন করলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ক্ষমতার প্রভাব থাকায় কোনো ‘রিসিভ কপি’ দেননি।
বাদীর আইনজীবী বলেন, সিটি করপোরেশনের বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্বাচিত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারে। কিন্তু তা না করার কারণে মামলা হয়েছে। মামলায় তাকে মেয়র নির্বাচিত ঘোষণা দেওয়ার দাবি করেছেন মুফতি সৈয়দ মুহম্মাদ ফয়জুল করীম।
তবে মামলার বাদী সৈয়দ মুহম্মাদ ফয়জুল করীমকে হোয়াটস অ্যাপে কল করা হলে সাড়া মেলেনি তার।
এর আগে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী ১ নম্বর বিবাদী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে চট্টগ্রাম প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক। গেল বছরের ১ অক্টোবর এ রায় দেয় আদালত।
এ রায়ের আলোকে এক প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন শাহাদাত হোসেন।
অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন হয়। নির্বাচনে হেরে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক হোসেন বাদী হয়ে একই বছরের ৩ মার্চ নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল মামলা করেন। সেই মামলায় চলতি বছরের ২৭ মার্চ বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র ঘোষণা করে সরকারের জারি করা গেজেট বাতিল করে রায় দেয়। সেইসঙ্গে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা হয়। যদিও মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি তিনি।