লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসের বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে ওঠেছে।
Published : 13 Jun 2024, 09:15 PM
গরু ব্যবসায়ীকে হাত-পা বেঁধে প্রায় আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিলাসকে অব্যাহতির কথা জানিয়েছে বলে জানান সংগঠনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফ ইসলাম।
রোববার আদিতমারী উপজেলার তালুক দুলালী এলাকার আইয়ুব আলীর (৪৮) কাছ থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে লালমনিরহাট সদর থানায় ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন আইয়ুব আলী।
অন্যরা হলেন- সৌরভ ওরফে টেরা, রায়হান, রব্বানী, বাবু ও তুষার। তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংগঠনবিরোধী শৃঙ্খলা-পরিপন্থি, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে রাশেদ জামান বিলাসকে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে বৃহস্পতিবার অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগের এই বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে।
থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, রোববার দুপুরে লালমনিরহাট জজ কোর্ট এলাকায় তিনটি মোটরসাইকেল করে পাঁচ যুবক এসে গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীকে জানায়, ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাস তাকে চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছেন। তারা ব্যবসায়ীকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে নিয়ে যান।
কলেজ ক্যাম্পাসে তাকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে পকেট থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেয় তারা। এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাস গরু ব্যবসায়ীর কাছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে ফেনসিডিল দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এক পর্যায়ে টাকা দিতে রাজী হলে যুবকরা আইয়ুব আলীকে শহরের ক্যান্টিন মোড় এলাকায় বিলাসের ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে যায়। বিকালে ব্যবসায়ীর ছেলে নাহিদ হাসান রনি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে বিলাসের চেম্বারে আসেন। টাকা দিয়ে মুক্ত হন ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী।
তবে চাঁদাবাজির সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ জামান বিলাস।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় তিনি জজ কোর্টে অবস্থান করছিলেন। এ সময় কলেজ থেকে ফোন আসে কিছু বহিরাগত যুবক কলেজে অবস্থান করছেন। কলেজে গিয়ে দেখতে পান তার পরিচিত কয়েক যুবক এক লোককে নিয়ে হট্টগোল করছেন। তারা ওই লোকের কাছে টাকা পান। কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে তিনি চলে যান।
পরের ঘটনায় তার কোনো সংশ্লিষ্ঠতা নেই বলে দাবি করেন বিলাশ।
এ সময় ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, অভিযোগটি এসআই তাজরুল ইসলাম তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।