যশোরের মণিরামপুরের নাগরঘোপ গ্রামের খেজুর বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ১২০টি গাছ রোপণ করা হয়েছিল।
Published : 16 Dec 2024, 10:28 PM
এক যুগের অধিক সময় ধরে খেজুরের রস নিয়ে গবেষণার পর যশোরের প্রকৌশলী সৈয়দ নকিব মাহমুদ গড়ে তোলেছিলেন একটি বাগান; যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির ১২০টি গাছ রোপণ করা হয়েছিল।
মণিরামপুর উপজেলার নাগরঘোপ গ্রামে গড়ে তোলা দেশের একমাত্র খেজুর গাছ গবেষণার বাগানটি চলতি বছরের অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতায় নষ্ট হয়েছে। প্রায় সব খেজুর গাছই মরে গেছে।
এ অবস্থায় গবেষণা নিয়ে বিপত্তির মধ্যে পড়েছেন বেসরকারি পর্যায়ের এই গবেষক। যদিও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, তারা বাগানটি আবার গড়ে তোলতে যে ধরনের সহায়তা দরকার তা করবেন।
যশোরের খেজুরের রস দেশখ্যাত। এই খেজুরের গাছ ও রস নিয়ে এক যুগ ধরে গবেষণা করেছেন সৈয়দ নকিব মাহমুদ। তিনি খেজুর গাছের জিনোম সিকোয়েন্সও করেছেন।
সৈয়দ নকিব মাহমুদ জানান, খেজুর গাছ রিসার্চ গার্ডেনে লাগানো হয়েছিল ১২০টি খেজুরের চারা। এই খেজুর গাছগুলো বড় হলে তা থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৯ থেকে ১৪ লিটার পর্যন্ত রস পাওয়া যেত। গাছগুলোর নামকরণ করা হয়েছিল রসবতী-১, রসবতী-২ এভাবে।
এখানে মোট আট ধরনের খেজুর গাছ ছিল। কিন্তু ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ওই বাগানে পানি জমে সব গাছই প্রায় মারা গেছে। মাত্র নয়টি গাছ বেঁচে আছে।
৪০ দিন পর্যন্ত পানিতে খেজুর গাছের চারা বেঁচে থাকে; কিন্তু ১০০ দিন নয়। এখনো সেখানে প্রায় দুই বিঘত পানি রয়েছে বলে জানান গবেষক।
তিনি জানান, তার পাওয়া আটটি ভিন্ন জিনোম সিকোয়েন্সের গাছ ‘ব্যাকআপ গার্ডেনে’ আছে। কিন্তু একেকটা একেক জায়গায়; যে কারণে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
“নতুন করে এই বাগানটি সম্পূর্ণ করা সময়সাপেক্ষ। কারণ, এখানে মাত্র চারটি মাতৃগাছ জীবিত আছে। বাকি চারটি গাছ মারা গেছে। যদিও আমার কাছে আট ধরনের গাছই আছে। কিন্তু সেগুলি বয়সে অনেক ছোট।”
তিনি বলেন, প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ এগিয়ে নেওয়া তার পক্ষে কঠিন। ওই জমিতে মাটি দিয়ে উঁচু করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় খেজুর গাছ রিসার্চ গার্ডেনটি জলাবদ্ধতার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছগুলো রোপণের সময়ই জমি উঁচু করা দরকার ছিল। তারপরও কয়েকবার তারা মাটি ভরাট করে গাছগুলো রক্ষার চেষ্টা করেছেন।
যে গাছগুলো বেঁচে আছে, সেগুলো রক্ষা এবং নতুন গাছ রোপণের জন্য যে ধরনের সহযোগিতা দরকার, সে ব্যাপারে ভূমিকা রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা।