তার চুল-দাড়ি কেটে, নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান উজিরপুর মডেল থানার ওসি জাফর আহমেদ।
Published : 16 Feb 2024, 10:05 PM
বরিশালের উজিরপুর মডেল থানার ওসির চেষ্টায় এক যুগ পর নিজের পরিবারের কাছে ফিরেছে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি।
পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আলম নূরকে (৪৬) শুক্রবার দুপুরে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান, ওই থানার ওসি মো. জাফর আহমেদ।
আলম নূর সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ছৈলা আফজালাবাদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নোয়াপাড়া গ্রামের প্রয়াত ফয়জুর রহমানের ছেলে।
ওসি জাফর আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে উপজেলার সাতলা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাঘুরি করছিলেন আলম।
“বিষয়টি আমাকে জানানো হলে পুলিশের একটি দল ওই গ্রামে পাঠিয়ে আলম নুরকে থানায় আনা হয়।”
দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারছিলেন না আলম। ঠিকমত নামও বলতে পারেননি। শুধু ছাতকের নাম বলছিলেন। তার ভাষা শুনে বুঝা যাচ্ছিল, তিনি সিলেট অঞ্চলের। পরে তার ছবিসহ ছাতক থানায় বার্তা পাঠানো হয়।
ওসি বলেন, ছাতক থানা পুলিশ তার পরিচয় শনাক্ত করে স্বজনদের খবর দেয়।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে আলম নুরের চাচাত ভাই মো. এখলাছ, মো. আজাদ, ভগ্নিপতি মো. ফজলুর রহমান, ভাগিনা মো. আবুল হাসান ও ভাতিজা মো. হাবিবুর রহমান থানায় আসেন।
ওসি আরও বলেন, “আলম নুরের একমাত্র কন্যা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ভিডিও কলের মাধ্যমে তার বাবার সাথে কথা বলেছে। দীর্ঘ ১২ বছর পর বাবাকে দেখতে পেয়ে আবেগআপ্লুত কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়েটি।”
মেয়ের বরাতে ওসি জানান, মেয়েটির আট বছর বয়সে তার বাবা নিখোঁজ হন। তার মা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়ার কাজ করেন। আলম কৃষিকাজ করতেন। ১২ বছর আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে হঠাৎ তিনি লাপাত্তা হন।
ওসি আরো জানান, আলম নুরকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। তাকে থানার কনস্টেবল ইলিয়াস গোসল করিয়ে সেলুনে নিয়ে চুল-দাড়ি কেটে দিয়েছেন। নতুন জামা-কাপড় পরিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্বজনরা আলম নুরকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন বলে জানান উজিরপুর মডেল থানার ওসি জাফর আহমেদ।