নাহিদ ও জয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
Published : 06 May 2023, 07:14 PM
দোকান কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন এক ব্যবসায়ী।
শুক্রবার রাত ৩টার দিকে আশুলিয়া থানায় স্থানীয় ব্যবসায়ী রোমেন রায়হান এ জিডি করেন বলে জানিয়েছেন এসআই সোহেল খন্দকার।
বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী রোমেন রায়হানের ইসলামনগর বাজারে একটি জুতার দোকান রয়েছে। সেটির কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগে এই জিডি করা হয়।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন ৪৪তম ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন নাহিদ এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মেহেদী হাসান জয়। নাহিদ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং জয় সাংগঠনিক সম্পাদক।
এরা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
রোমেন রায়হান বলেন, "শুক্রবার সন্ধ্যায় দোকানে গিয়ে দেখি, নাহিদ ও জয় দোকানের এক কর্মচারীকে মারধর করছে। আমি ক্যাম্পাসের সাবেক শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়ার পরও তারা মারতে থাকে। আমার বড় ভাই এতে বাধা দিলে তাকেও আঘাত করে।”
ছাত্রলীগের দুই নেতা দোকান বন্ধ রাখতে বলে গেছেন জানিয়ে রোমেন বলেন, “আমি দোকান খুলতে পারছি না। আমি এই ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের জন্য রাতেই আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করেছি।"
তবে ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ ও জয় মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নাহিদ বলেন, "ওই দোকান থেকে ১৩৫০ টাকায় জুতা কিনে ১৫০০ টাকা দিই। কিন্তু ১৫০ টাকার বদলে ৫০ টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ করলে ওই কর্মচারী আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করি। কোনও মারামারি সেখানে হয়নি।"
মারধরের ঘটনা ঘটেনি দাবি করে জয় বলেন, "ওই জুতার কোনো ‘ইনট্যাক্ট কপি’ না থাকায় কর্মচারী জুতা জোড়া পালিশ করতে থাকেন। তাকে তাড়াতাড়ি কাজ করতে বলায় তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আমাদের ভাঙতি টাকাও ফেরত দেননি। এমনকি জুতা কেনার রশিদও দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমরা ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ দেব।"
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, জুতা কেনার পর পালিশ করতে দেরি করেন দোকানের কর্মচারী মিরাজুল ইসলাম। এতে সাব্বির উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং দ্রুত পালিশ করার জন্য ধমক দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই কর্মচারীর সঙ্গে সাব্বিরের কথা কাটাকাটি হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাব্বির ওই কর্মচারীকে মারতে মারতে দোকান থেকে বাইরে রাস্তায় নিয়ে যান। সেখানে ওই কর্মচারীকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করানো হয়। এ সময় দোকান মালিকের বড় ভাই সাবেক বুয়েট শিক্ষার্থী নেওয়াজ বাপ্পি বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করলে তাকেও আঘাত করেন জয়।
দোকানের কর্মচারী মিরাজুল ইসলাম বলেন, "পা ধরে মাফ চাওয়ার পরও আমাকে মারধর করা হয়। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।"
আশুলিয়া থানার এসআই সোহেল খন্দকার বলেন, "গতকাল দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি একটি অভিযোগের কথা শুনেছি। এটি আমাকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এ মুহূর্তে আমি থানার বাইরে, থানায় গেলে অভিযোগের পুরো বিষয়টা বুঝতে পারব।"
দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বিষয়টা আমি অবগত। ছাত্রলীগের ভিতরে এসব কাজ কখনোই কাম্য না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।"