খামার মালিক বলেন, “আরো পাঁচটি অসুস্থ আছে। সেগুলোও মারা যাওয়ার আশঙ্কা করছি।”
Published : 12 Jun 2024, 09:26 PM
নেত্রকোণার পূর্বধলায় কাঁচা নেপিয়ার ঘাস খেয়ে এক খামারেই ২৮টি গরু মারা গেছে। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে খামার মালিকের দাবি।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে ‘তাহাযীদ এগ্রো’ নামে খামারে রোববার থেকে বুধবার পর্যন্ত গরু মৃত্যুর এ ঘটনা ঘটে বলে মালিক জাহেরুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় কাঁচা নেপিয়ার ঘাস খাওয়ানোর পরই খামারের গরুগুলো অসুস্থ হয়ে যায়। রোববার থেকে এক এক করে গরু মারা যেতে শুরু করে। বুধবার পর্যন্ত ২৮টি গরু মারা গেছে।
কাঁচা নেপিয়ার ঘাসে থাকা মাত্রাতিরিক্ত নাইট্রোজেনের বিষক্রিয়া গরুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন পূর্বধলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এমএমএ আউয়াল তালুকদার।
খামারি জাহেরুল বলেন, “২০২০ সালের শেষের দিকে প্রাথমিকভাবে ৩০ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে খামার চালু করি। বর্তমানে তিনটি শেডে ২০৩টি গরু লালনপালন করছি। এর মধ্যে একটি শেডের গরু অসুস্থ হয়েছে। এই শেডে ১১০টি গরু ছিল; ২৮টি মারা গেছে। আরো পাঁচটি অসুস্থ আছে। সেগুলোও মারা যাওয়ার আশঙ্কা করছি।”
বাকিগুলোর তেমন কোনো সমস্যা হয়নি জানিয়ে খামার মালিক বলেন, “এবার কোরবানির জন্য গরু মোটা-তাজা করতে বেশ কিছু টাকা ঋণ করেছি। আর যে ষাঁড়গুলো মোটা-তাজা করছিলাম ওইগুলো এই শেডে ছিল। অসুস্থ হয়ে এসব গরুই মারা গেছে। অন্য শেডে যে গরু রয়েছে সেখানে বেশিরভাগই বাছুর।
“লক্ষণ দেখে চিকিৎসকরা বলছেন, ঘাসের বিষক্রিয়ায় গরু মারা যাচ্ছে। এরপরও সঠিক কারণ জানতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা আলামত ঢাকায় পাঠাচ্ছেন। তবে কারণ জানতে জানতেই আমার অসুস্থ গরুগুলো মরে শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ভাবছিলাম গরু বিক্রি করে করে ঋণ পরিশোধ করব। খামারে মারা যাওয়া গরুগুলোর মধ্যে কয়েকটি গাভি ছিল। আর বাকিগুলো ষাঁড়, কোরবানির বাজারে বিক্রি জন্য যেগুলো প্রস্তুত করা হয়েছিল।
“সব মিলিয়ে আনুমানিক ৬০ লাখ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। যদি অসুস্থ পাঁচটিও মারা যায় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে ৭০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
“এখন কেমনে ঘুরে দাঁড়াব সেই চিন্তায় আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সরকার যদি কোনোভাবে সহযোগিতা করে তবে আমি আবারো ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”
পূর্বধলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আউয়াল বলেন, “বৃষ্টির সময় কচি ঘাসে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেশি থাকে। নাইট্রেট বিষক্রিয়ায় গরুগুলো মারা যেতে পারে। ঘাসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার পর আরো বিস্তারিত জানা যাবে।”
ওই খামারির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে তাদের চিকিৎসক দল অন্য গরুগুলোর চিকিৎসা ও খোঁজ-খবর নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।