“জয়দীপ চৌধুরী মাধবসহ সাত-আটজনের বিরুদ্ধে শনিবার নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী কাজল মিয়া।”
Published : 02 Mar 2025, 07:38 PM
চাঁদা না পেয়ে হকারকে তুলে নিয়ে মারধরে অভিযোগে বহিষ্কৃত সিলেট মহানগর যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দীপ চৌধুরী মাধবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার সকালে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেবকুনা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “জয়দীপ চৌধুরী মাধবসহ সাত-আটজনের বিরুদ্ধে শনিবার নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী কাজল মিয়া। মামলার এজাহারে মাধব ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে জেলা পরিষদের সামনে থেকে অপহরণ এবং ১৬ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়াসহ আরও ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ আনেন কাজল।”
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মাধবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানান মহানগর পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মাধবের বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় দুজন হকারকে তুলে নেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার রাত ৯টা থেকে নগরীর জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করেন শতাধিক হকার।
খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসলেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। উল্টো পুলিশকে ধাওয়া দেন বিক্ষুব্ধ হকাররা। পরে পুলিশ সদস্যরা ওই এলাকা ছেড়ে যান।
আন্দোলনরত হকারদের অভিযোগ, সম্প্রতি যুবদল নেতা মাধব তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছেন। চাঁদা না দেওয়ায় ওই ব্যক্তি শুক্রবার দুজন হকারকে উঠিয়ে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
এ সময় তিনি বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দিলে হকাররা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।
শুক্রবার রাতে নগরীর জিন্দাবাজারে সড়ক অবরোধের সময় সিলেট মহানগর হকার্স ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুহুল আমিন রুবেল বলেছিলেন, “সিলেট মহানগর যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাধব একজন সন্ত্রাসী। তিনি কয়েকদিন যাবৎ আমাদের নিরীহ হকারদের ধরে ধরে আনে আর দুই/তিন লাখ টাকা চাঁদা চায়।
“তাদের সঙ্গে আমরা অনেক বার আপোষের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার দাবি তাকে প্রতিদিন চাঁদা দিতে হবে ১ লাখ টাকা করে। আজকেও আমাদের এক মুরব্বিকে তুলে নিয়েছে। উনাকে এখন এখানে এনে দিতে হবে। এই মাধবকে এখন গ্রেপ্তার করতে হবে প্রশাসন।”
তিনি আরও বলেন, “এমনকি বিএনপি থেকে মাধবকে বহিষ্কারের দাবি জানাই। যতক্ষণ পর্যন্ত মাধবকে বহিষ্কার করা হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। মাধবের বহিষ্কার চাই, মাধবকে গ্রেপ্তার চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে বহিষ্কার ও গ্রেপ্তার করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
এ অবস্থার মধ্যে শুক্রবার মধ্যরাতে সিলেট মহানগর যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দীপ চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বহিষ্কৃত ব্যক্তির সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
এরপর ফেইসবুকে দেওয়া এক পোস্টে অভিযোগ অস্বীকার করে মাধব লিখেন, “আমার নাম ভাঙিয়ে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। এর ভাগ সিলেট বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতাও পাচ্ছেন।”