২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফেরার পথে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর হামলার ঘটনা ঘটে।
Published : 05 Dec 2024, 09:34 PM
ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে বোমা হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনার সাত বছর পর তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসিসহ ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে ফেনী সদর আমলী আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সাইয়েদ মো. শাফায়াত মামলাটি তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে পিবিআইকে প্রতিবেদন জামা দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম।
এর আগে ২৮ নভেম্বর ‘যমুনা হাই ডিলাক্স’ পরিবহনের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিলন বাদী হয়ে ফেনী সদর আমলী আদালতে মামলার আবেদন করেন।
মামলায় তৎকালীন ফেনী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম জাহাঙ্গীর সরকারসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় তৎকালীন পুলিশ সুপার ছাড়াও তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আমিনুল ইসলাম, ফেনী মডেল থানার ওসি মো. রাশেদ খাঁন চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করিম উল্যাহ বিকম, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার, ফেনী জেলা যুবলীগ সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, দাগনভূঞা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক পৌর মেয়র ওমর ফারুক খানকে আসামি করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন বাহার, লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, সিরাজুল ইসলাম, ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, শর্শদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জানে আলম, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মানিক, ধলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমেদ মুন্সি, ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সালাহউদ্দিন ফিরোজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হায়দার জর্জ, পৌর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু এবং পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল আলম মোহন।
মামলায় বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ঢাকায় ফেরার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনী সদর উপজেলার মহিপাল এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
হামলাকারীরা খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে যমুনা পরিবহনের একটি বাস ও চৌদ্দগ্রাম ট্রান্সপোর্টের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
সেই সময় ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আবুল কাশেম মিলন (মামলার বাদী), লক্ষ্মীপুরের নেয়ামতপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল মালেক ড্রাইভার, বাঞ্ছানগর এলাকার ফারুক ড্রাইভার, নোয়াখালীর চরজব্বর থানার হাজীপুর এলাকার হেদায়েত উল্যাহ ড্রাইভার এবং সুধারাম থানার চর শুল্লকিয়া এলাকার হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম জানান, বিচারক মামলার শুনানি শেষে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তার সহায়তায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সমন বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে বলে জানান তিনি।