বিচারক এজলাশে উঠে এ মামলার রায়ের জন্য নতুন তারিখ ঘোষণা করেন। পরে আসামিদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
Published : 16 Jan 2024, 02:17 PM
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে চল্লিশোর্ধ নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি নতুন তারিখ রেখেছে আদালত।
মঙ্গলবার নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস ৫ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার নতুন তারিখ ঘোষণা করেন বলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) সালেহ আহমদ সোহেল খান জানান।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর এ মামলায় অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে মঙ্গলবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করেছিলেন বিচারক।
সোহেল খান বলেন, সকালে জেলা কারাগার থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বেলা ১১টার দিকে বিচারক এজলাশে উঠে এ মামলার রায়ের জন্য নতুন তারিখ ঘোষণা করেন। পরে কাঠগড়া থেকে আসামিদের নামিয়ে আবার জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলায় বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের রাতে উপজেলার মধ্যবাগ্যা গ্রামে চল্লিশোর্ধ এক নারীর ঘরে ঢুকে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে তাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।
চার সন্তানের ওই জননীর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জেরে ওই ঘটনা ঘটানো হয়।পরদিন ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।
২০১৯ সালের ২৭ মার্চ সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য রুহুল আমিনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এর মধ্যে রুহুল আমিনসহ ১৫ জন আসামি গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন, সুবর্ণচরের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের মো. সোহেল (৩৮), মো. হানিফ (৩০), স্বপন (৪২), মো. চৌধুরী (২৫), ইব্রাহীম খলিল বেচু (২৫), মো. বাদশা আলম বসু (৪০), আবুল হোসেন আবু (৪০), মোশারফ (৩৫), মো. সালাউদ্দিন (৩২), মো. জসিম উদ্দিন (৩২), মো. হাসান আলী বুলু (৪৫), মো. মুরাদ (২৮), মো. জামাল ওরফে হেঞ্জু মাঝি (২৮) ও মো. সোহেল (২৮)। আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক।
এপিপি সালেহ আহমদ সোহেল খান জানান, আলোচিত এ মামলায় ২৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া আসামিপক্ষ চারজন সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন করেছেন।
রায় ঘোষণার পূর্ব নির্ধারিত তারিখে ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামী স্বজনদের সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের নতুন তারিখ ঘোষণা হওয়ার পর ওই নারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা ভুলতে পারি নাই। আমি সব সাক্ষ্য প্রমাণ আদালতে হাজির করেছি। আসামিরাও অপরাধ স্বীকার করেছে। এখন আমি আদালতের কাছে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।”
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘নিরাপত্তাহীনতায়’ ভুগছেন জানিয়ে ওই নারী বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে আমার বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে লোকজন ঘোরাফেরা করে। তাদের কেউ কেউ মুখ চেনা মুখ; কেউ কেউ অচেনা। এ নিয়ে আমি আতঙ্কে রয়েছি। বিষয়টি চরজব্বর থানায় মৌখিক জানানো হয়েছে।”
তবে চরজব্বর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বলছেন, “এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায় নাই। তবে থানায় এসে কেউ লিখিত অখবা মৌখিক অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”