২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি হলে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান: রনি সরকার

বিএনপি পরিবারের সন্তান রনির দাবি, ভোট সুষ্ঠু হলে গাজীপুরে ‘নীরব বিপ্লব’ ঘটবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2023, 04:44 AM
Updated : 25 May 2023, 04:44 AM

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনি সকালের ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও পরে কী হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

বিএনপি পরিবারের সন্তান রনি বলেছেন, ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি হলে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করবেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ঢাকার লাগোয়া এ সিটি করপোরেশনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। হাতি প্রতীকের প্রার্থী রনি নিজের ভোট দেন টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতাল কেন্দ্রে।

ভোট দিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি অভিযোগ করেন, কয়েকটি কেন্দ্রে তার নির্বাচনী এজেন্টদের বাধা দেওয়া হয়েছে।

“দুয়েকটি কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের নৌকার এজেন্টরা প্রাথমিকভাবে ঢুকতে দেয়নি। পরে আমি গিয়ে তাদের কেন্দ্রে দিয়ে এসেছি।”

রনি বলেন, “কেন্দ্রের ভেতরের পরিবেশ মোটামুটি ভালো। কিন্তু বাইরে যে জটলা থাকে নৌকার কর্মীদের… এটা ৮টার আগের ঘটনা।”

আরও কিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করবেন বলে জানিয়েছেন এ স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে দিনের প্রথম ভাগে যেটুকু দেখেছেন, তাতে তিনি সন্তুষ্ট।

রনি বলেন, “এখন পর্যন্ত পরিবেশ মোটামুটি ঠিক আছে। ভোটগ্রহণ ভেতরে যতটুকু দেখেছি সুষ্ঠু আছে। এখন বিভিন্ন কেন্দ্রে যাব, তারপরে বুঝতে পারব আসলে কী হচ্ছে।

“আমার অনেক এজেন্ট বাইরে থেকে চলে যাচ্ছে, আসলে তারা ভেতরে ঢোকার সাহস পাচ্ছে না। এজেন্টদেরকে তিন-চারদিন ধরে ভয় দেখানো হচ্ছে। যারা খুব সাহসিকতা নিয়ে আসছে, তারাই ভেতরে থাকছে।”

বিএনপি এ নির্বাচন বর্জন করলেও ভোটে থেকে কার্যত দলেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন বিএনপি নেতার ছেলে রনি। তার চাচা হাসানউদ্দিন সরকার ২০১৮ সালের ভোটে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন, শেষ পর্যন্ত হেরে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলমের কাছে।

রনি বলেন, “আমি নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকব। আমি বারবার বলেছি, ২০১৮ সালে কিন্তু ১১টা পর্যন্ত ভোট সুষ্ঠুভাবে হয়েছে, তারপর থেকে পরিস্থিতি পাল্টেছে।

“সেই ঘটনার যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে নির্বাচন অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করব। ৪টা-৫টা পর্যন্ত যদি সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়, তাহলে যাই ফল হোক আমি মেনে নেব।”

ইভিএম নিয়ে এক প্রশ্নে রনি বলেন, “ইভিএমের কারণে আমি যতটুকু দেখলাম, মোটামুটি ঠিক আছে। গুড এনাফ। এখন পর্যন্ত কোনো অসঙ্গতি পাইনি। (ইভিএমের) ভেতরে কী হচ্ছে, আমি জানি না। আমি যতটুকু দিলাম, এই পর্যন্ত ঠিক আছে।”

বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা তাকে ‘নীরবে’ ভোট দিচ্ছে দাবি করে রনি সরকার বলেন, “বিএনপির তৃণমূল যারা আছে, বিএনপির সমর্থক যারা আছে, তারা কিন্তু নীরব আছে, নীরবে ভোট দিচ্ছে। কারণ, মামলার একটা ব্যাপার আছে। আমি বারবার বলেছি, গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুরে একটা গ্রেপ্তারের মহড়া চলছে।

“বিএনপি যারা করে, যারা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, তাদেরকে মোটামুটি গ্রেপ্তার করা, ঘরে ঘরে তল্লাশি ব্যাপকভাবে হচ্ছে। তো, স্বাভাবিক কারণে তারা একটু চুপচাপ আছে।”

সব মিলিয়ে দলীয় প্রতীকে পাঁচজন এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর এ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান রয়েছেন মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আরও আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন, যিনি গাজীপুরের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা। শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনার কথাই বলছে সবাই।

রনি বলেন, “আমি মনে করি, যদি সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়, নীরব বিপ্লব ঘটবে। এবং ইনশাআল্লাহ, আমি ১০০ ভাগ আশাবাদী।”