“রায়হান ও তার লোকজন নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য সমসের আলীর অনুসারী এবং তার বিজয় মিছিলেও ছিল”, দাবি করেন গুলিবিদ্ধ বাবলু মিয়া।
Published : 23 Jun 2023, 09:27 PM
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাদক ব্যবসা নিয়ে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে চনপাড়ার অফিস ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) আবির হোসেন।
গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন- পুনর্বাসন কেন্দ্রের চার নম্বর ওয়ার্ডের মৃত বাদল মিয়ার ছেলে বাবলু মিয়া (২০) এবং ছয় নম্বর ওয়ার্ডের আজহার মোল্লার ছেলে মো. মাসুম (২২)।
দুপুর ২টার পর তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় বলে জানান হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া৷ তিনি বলেন, বাবলু মিয়ার পায়ে এবং মাসুমের কোমড়ে গুলি লেগেছে৷
গুলিবিদ্ধ বাবলু মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “দুপুরে জুমার নামাজ শেষে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অফিস ঘাট এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে চার বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলাম৷ এ সময় মাদক ব্যবসায়ী মো. রায়হান ও তার অনুসারীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়৷ আমরা দৌড়ে পালানোর সময় গুলি করা হয়।
“ইউপি সদস্য পদে উপনির্বাচনে জয়নাল ভাইয়ের পক্ষে কাজ করছি বলে আমাদের ওপর এ হামলা করা হইসে৷ রায়হান নির্বাচনে বিজয়ী সমসের আলীর ঘনিষ্ঠজন৷ আমাদের ওপর হামলা করার আগে সমসের আলীর বিজয় মিছিলেও ছিল রায়হান ও তার লোকজন”, দাবি করেন বাবলু মিয়া।
গুলিবিদ্ধ দুজনকে নিজের অনুসারী বলে দাবি করেছেন জয়নাল আবেদীন৷ তার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে৷ মাদক ব্যবসা নিয়ে সমসের আলীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে৷
১২ জুন কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে উপনির্বাচনে সমসের আলীর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জয়নাল৷
জয়নাল আবেদীন বলেন, বিরোধের জেরেই তার অনুসারীদের ওপর হামলা করা হয়েছে৷
পুলিশ জানায়, সদ্য নির্বাচিত ইউপি সদস্য সমসের আলীর বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতি, মারামারির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে৷ তার অনুসারী রায়হানও একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী৷ বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের পর রায়হানকে গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷
পরে জামিনে বেরিয়ে নিজের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। কিন্তু সমসের আলী ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আবারও সক্রিয় হয় রায়হান৷
কথা বলার জন্য রায়হানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি৷
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদ্য নির্বাচিত ইউপি সদস্য সমসের আলী বলেন, “গুলির খবর শুনেছি৷ তবে এ ঘটনার সঙ্গে নির্বাচন বা আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই৷ রায়হানের বিষয়টিও আমি জানি না৷”
এ ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি জানিয়ে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন বলেন, “রায়হান একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত৷ একাধিকবার গ্রেপ্তারও হয়েছে৷ গুলির ঘটনার তদন্ত চলছে৷ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“