লাশ রাখা ও সংরক্ষণের ভাড়া বাবদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা চেয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Published : 11 Dec 2023, 09:42 AM
ভারতীয় দুই নাগরিকের লাশ নিয়ে বিপাকে পড়েছে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতু এলাকা থেকে আটকের পর অনুপ্রবেশের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শরীয়তপুর জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন তারা। একজন চলতি বছরের জানুয়ারি এবং আরেকজন এপ্রিলে মারা যান।
তাদের একজন ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের সাতুরা সুলতানপুর জেলার চেয়াপুর থানার চন্দ্রপালের ছেলে ৪০ বছর বয়সী সতেন্দ্র কুমার। আরেকজন ৩৮ বছর বয়সী বাবুল সিং বলে জানা গেলেও তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
হাসপাতালের হিমঘরে পড়ে থাকা দুটি লাশের সংরক্ষণের ভাড়া হয়েছে ৯ লাখ টাকার বেশি। এই টাকা চেয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শরীয়তপুর কারাগারের জেলার (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আবু সাদ্দাত জানান, সতেন্দ্র কুমারকে গত বছরের ৮ অক্টোবর পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়। পরে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা পুলিশের করা মামলায় ওই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি সকালে সতেন্দ্র কারাগারের ভেতরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেলা ১২টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে হাসপাতালের হিমাগারেই রাখা হয়।
বাবুল সিং গত বছরের ১৭ মে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজা এলাকা থেকে আটক হন সেনাবাহিনীর হাতে। তার নামেও অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা হয়। ওইদিনই পাঠানো হয় কারাগারে।
চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল রাতে বাবুল অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকেও শরীয়তপুর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ময়নাতদন্ত শেষে বাবুলের লাশও হিমাগারে রাখা হয় বলে জানান আবু সাদ্দাত।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান বলেন, “হস্তান্তর করতে না পারায় একটি মরদেহ ১১ মাস এবং আরেকটি ৮ মাস ধরে আমাদের হিমাগারে রাখা আছে। একটি মরদেহের জন্য প্রতিদিনের ফ্রিজ ভাড়া দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা আছে। সে হিসাবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত লাশ দুটি হিমাগারে রাখার ভাড়া হয়েছে ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা।”
“একে তো এ বিল পরিশোধ করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। তার উপর দীর্ঘদিন ধরে লাশগুলো পড়ে থাকায় হিমাগারে অন্য মরদেহ রাখতে সমস্যা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “মরদেহ দুটি রাখার ভাড়া সাড়ে ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করতে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”
বিলের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ আবু সাদ্দাত বলেন, “দুই ভারতীয় বন্দির লাশ ঢাকায় নেওয়ার জন্য আইজি প্রিজনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। লাশ দুটি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের জন্য পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আসা পর্যন্ত লাশ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ফ্রিজেই সংরক্ষণ করা থাকবে বলে জানান তিনি।