ফরিদপুরে মন্দিরে ঢুকে নির্মাণাধীন সরস্বতী প্রতিমা ভাঙায় যুবক আটক

একই ব্যক্তি গত বছর ফরিদপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ ইসকন মন্দিরের সরস্বতী প্রতিমা ভেঙেছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ফরিদপুরে একটি মন্দিরে ঢুকে নির্মাণাধীন সরস্বতী প্রতিমা ভেঙে ফেলার অভিযোগে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী।

শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরের ভাটিলক্ষীপুর এলাকার কালী মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান।

আটক হওয়া মো. মিরাজউদ্দীন (৩০) রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বাজেদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ফরিদপুর শহরে ইজিবাইক চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করেন এবং শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।

মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাতে এক ব্যক্তি মন্দিরের সামনে ইজিবাইক রেখে মন্দিরের বারান্দায় ঢুকে বানিয়ে রাখা সরস্বতী প্রতিমা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে প্রতিমাটি ভেঙে যায়।

ওই মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য রামচন্দ্র মালো বলেন, “আমাদের মন্দিরটির অবস্থান ভাটিলক্ষীপুরের একটি সড়কের পাশে। শুক্রবার রাত ১০টা ৫৩ মিনিটের দিকে মন্দিরের সামনে যাত্রীশুন্য একটি ইজিবাইক এসে দাঁড়ায়।

“এরপর ওই ইজিবাইকের চালক মন্দিরের বারান্দায় ঢুকে নির্মাণাধীন সরস্বতী প্রতিমা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে দেয় “

তিনি আরও জানান, মন্দিরটির বারান্দা আনুমানিক চার ফুট উঁচু ইটের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা এবং সামনে রডের তৈরি মূল ফটক। তবে মন্দিরের একপাশের কিছু অংশে ইটের গাঁথুনি না থাকায় সহজেই যে কেউ মন্দিরের বারান্দায় প্রবেশ করতে পারে।

মন্দির কমিটির এ সদস্য আরও অভিযোগ করেন, “এই একই ব্যক্তি গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ ইসকন মন্দিরের সরস্বতী প্রতিমা ভেঙেছিল। তখন তাকে ‘পাগল’ বলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।”

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সমর মন্ডল বলেন, আগামী সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিতব্য সরস্বতী পূজার জন্য একজন মৃৎশিল্পীকে দিয়ে এ প্রতিমাটি বানানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, “আমরা এই মন্দিরের পাশের একটি ছাত্রাবাসে থাকি। এখানে আমরা অনেক ছাত্ররা মিলে সরস্বতী পূজা করতে চেয়েছিলাম। অনেক বন্ধুকে নিমন্ত্রণও দিয়েছি। কিন্তু এই প্রতিমা এমন এক সময় ভাঙা হল যে সংস্কারের সময়ও পাওয়া যাবে না।”

কোতোয়ালি থানার ওসি আসাদউজ্জামান বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের খবর পেয়ে পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে এসে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা বলেন, “এ ঘটনায় মন্দির কমিটির একজন বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মামলা হওয়ার পর ওই যুবককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।”