বিচারকদের প্রতি বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
Published : 01 Jun 2024, 11:27 PM
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, “ন্যায় ও সুবিচারের জন্য আইনজীবীদের লড়াই শুধু আদালতের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না।”
তিনি বলেছেন, “সমাজের প্রতিটি মানুষের জন্য ন্যায়বিচার ভিত্তিক জীবন উপহার দেওয়া একজন আইনজীবীর দায়িত্ব। বিবেকের কাছে আইনজীবীদের দায়বদ্ধ থাকতে হবে এই ভেবে যে, ‘আমরা সৎ থাকতে পারছি কিনা’।”
শনিবার সকালে ময়মনসিংহ জেলা জজ আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ উদ্বোধন শেষে নগরীর টাউন হলে অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে জেলা আইনজীবীদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
বিচারকদের প্রতি বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তিনি বলেন, “প্রত্যেক নাগরিকেরই দেশে আইনের আশ্রয় লাভ ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার আছে। মানুষের সেই অধিকার নিশ্চিত করতে জেলা জজগণ সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছেন।”
এ সময় হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজিস্টার মশিউর রহমান, জেলা ও দায়রা জজ মমতাজ পারভীন, মুখ্য বিচারিক হাকিম মুমিনুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মুহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল কালামের সঞ্চালনায় সংবর্ধনায় দেওয়া বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, “বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করতেন। এই অসাম্প্রদায়িক চেতনা আমরা সবাই ধারণ করি। আসুন, বাংলাদেশকে আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করি।”
সামরিক শাসন একটি অসাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা বিচার বিভাগ সেই অসাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছি। সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে।”
নিজেদের ও বিচার বিভাগের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে গিয়ে অন্তত বারোজন বিচারক বিব্রতবোধ করেছি। এই বিচার বিভাগ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আল বদর, আল শামসদের বিচার করেছে, বিচার এখনো চলমান রয়েছে।”
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, “দায়িত্বভার গ্রহণের পর আমি বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন, বিচার সেবাপ্রাপ্তি সহজিকরণ তথা বিচার বিভাগের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। যারা আইন নিয়ে গবেষণা করতে চান, তাদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট খুলেছি। সেখানে আইনজীবী ও বিচারকগণ গবেষণার সুযোগ পাবেন।”
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজিস্টার মশিউর রহমান, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জহিরুল হক খোকা, আইনজীবী এ এইচ এম খালেকুজ্জামান, মোসলেম উদ্দিন, কবির উদ্দিন ভূইয়া, জালাল উদ্দিন খান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, আইনজীবী মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণা ও শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিচারকরা ছিলেন।