বেনাপোলে সোমবার থেকে ২ দিনের কর্মবিরতিতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা

এতে দেশের বৃহত্তম এ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির কাজকর্ম বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা।

আসাদুজ্জামান আসাদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2023, 06:00 PM
Updated : 29 Jan 2023, 06:00 PM

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পত্র পেয়েও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা দুদিনের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।

‘কাস্টমস এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০’ সংশোধনের দাবিতে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এ কর্মবিরতি ডেকেছে।

বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু বলেন, “পত্রপ্রাপ্তির পর রোববার রাতে আমরা মিটিং করেছি। ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা সোমবার ও মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করব। এতে দুদিন বেনাপোল বন্দরের সকল কাজকর্ম বন্ধ থাকবে।”

তিনি জানান, রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস রপ্তানি ও বন্ড শাখার প্রথম সচিব আবুল বাশার মোহম্মদ শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি পত্র বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনেকে দেওয়া হয়েছে।

পত্রে তাদের প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনার জন্য ৭ ফেব্রুয়ারি রাজস্ব ভবনে অংশ নেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। এতে কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ সংশোধনের লক্ষ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানানো হয়। 

কাস্টমস এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ এ দেশের সব সিএন্ডএফ এজেন্টের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে বলে মনে করেন

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন।

তিনি বলেন, ওই বিধিমালা সংশোধন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনটি জানায়, লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ এর বিধি ১৫(৫) ঘ, ১৯(খ)(আ), ২৩(১)ঞও এবং ২৪(৪) সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীদের স্বার্থবিরোধী। ফলে এসব বিধি সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।

তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালা ২০০০ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা, এইচএস কোড ও সিপিসি ভুলের কারণে জরিমানা আরোপ ও শাস্তিমূলক বিধিবিধান বাতিল করা।

শনিবার এনবিআরকে দেওয়া চিঠিতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া চিঠিতে সংগঠনের সভাপতি শামসুর রহমান এবং মহাসচিব মো. সুলতান হোসেন খানের স্বাক্ষর রয়েছে।

এতে বলা হয়, বিধিমালা জারির পর এর প্রয়োজনীয় সংশোধনের জন্য এ ফেডারেশন বার বার চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ জানায়। এরপরও কোনো ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে উত্থাপিত লাইসেন্সিং রুলের কয়েকটি বিধি ও উপ-বিধি সংশোধনীর প্রস্তাব করা হলেও তা আমলে নেয়নি রাজস্ব বোর্ড। এ কারণে গত বছর কয়েকবার কর্মবিরতি করেন তারা।

এতে আরও বলা হয়, গত বছরের জুলাই মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে। এ সময় অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত দাবির সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তারা বিধিমালা সংশোধনের বিষয়ে সংগঠনের নেতাদের আশ্বস্ত করেন।

দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড লাইসেন্সিং রুল সংশোধনের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এ বিষয়ে ফেডারেশনের নেতারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেও কার্যকর কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। আর তাতে সারা বাংলাদেশে কর্মরত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।