দিনমজুর শামসুল ৩১ জানুয়ারি নিখোঁজ হন। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি তার পরিবার মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানায় জিডি করে।
Published : 11 Feb 2025, 09:34 PM
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ডোবা থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ১১ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এ যুবক ‘প্রেমিকার’ ছেলের হাতে খুন হয়েছেন।
সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার তন্তর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণখোলা গ্রামের খানবাড়ির একটি ডোবা থেকে কচুরিপানায় ঢাকা লাশটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) ইমরান খান।
নিহত শামসুল হাওলাদার (৪০) সিরাজদিখান উপজেলার বাসাইল গ্রামের মনু হাওলাদারের ছেলে। দিনমজুর শামসুল ৩১ জানুয়ারি নিখোঁজ হন। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি তার পরিবার সিরাজদিখান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে চারজনকে। তারা হলেন- ব্রাহ্মণখোলা গ্রামের লিপি আক্তার (৩৮), তার স্বামী জাফর খান (৫৫), তাদের ছেলে জিহাদ খান (২০) এবং ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী।
জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজদিখান থানার এসআই সাইউল ইসলাম বলেন, তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হয়ে সোমবার রাতে লিপি আক্তার ও তার স্বামী জাফর খানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এক পর্যায়ে লিপি আক্তারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বসতঘরের শোকেস থেকে শামসুল হাওলাদারের ব্যবহৃত মোবাইলটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লিপি পাশের একটি ডোবায় কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখা শামসুল হাওলাদারের লাশটি দেখিয়ে দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে।
পরিবারের সদস্যদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইউল ইসলাম দাবি করেন, লিপি আক্তারের সঙ্গে শামসুল হাওলাদারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এর জেরে লিপির সঙ্গে দেখা করতে নিখোঁজ হওয়ার রাতে ওই বাড়িতে যান শামসুল।
“বিষয়টি লিপি আক্তারের ছেলে জিহাদের চোখে পড়লে সে শামসুলকে মারধর করে। মারধরে সেখানেই শামসুলের মৃত্যু হয়। পরে পরিবারের লোকজন মিলে শামসুলের লাশটি গুম করে পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।”
তবে লিপি আক্তারের দাবি, শামসুল হাওলাদার তার সঙ্গে দেখা করতে এসে তাদের বাড়ির টিউবয়েলের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় কারও উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি দৌড় দিলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান। পরে শামসুলের লাশ তিনি টেনে-হিঁচড়ে প্রায় একশ গজ দূরে নিয়ে ডোবায় ফেলে দেন।
সহকারী পুলিশ সুপার ইমরান খান বলেন, শামসুল হাওলাদারের লাশ উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
“এ নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে। ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও সম্পৃক্ততা থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।”
এ ঘটনায় সিরাজদিখান থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।