“ওই সম্পত্তি ছিল তিনজন হিন্দুর। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় তারা ভারতে চলে যান। পরে সরকার জায়গাটি নিয়ে নেয়।”
Published : 08 Feb 2025, 05:03 PM
বগুড়া শহরে গুঁড়িয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগ, জাসদ (ইনু), টাউন ক্লাব ও ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ের জায়গাটির মালিকানা দাবি করে ব্যানার টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলার পর শনিবার দুপুরে সেখানে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছে একদল লোক।
এ সময় বগুড়া সদর ফাঁড়ির ওসি সিরাজুল ইসলাম তাদের বাধা দিলেও শোনেননি তারা।
জমির মালিকানা দাবিদারদের ওসি বলেন, “জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি এনে তারপর কাজ শুরু করুন।”
এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে বিতণ্ডার এক পর্যায়ে আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।
ব্যানার মালিক দাবিদার মোকসুদুর রহমান, মিজানুর রহমান, মরিয়ম বেগম, কহিনুর বেগম, সাবানা সুলতানাসহ অন্তত ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ঝুলিয়ে দেওয়া ব্যানারে লেখা রয়েছে, “১৯৫২ সালে ক্রয়সূত্রে মালিক। মালিকদের নাম লেখা আছে মো. কোরবান আলী, আব্দুর রহমান, রুস্তম আলী ও বাবু কালি গোপাল। জমির পরিমাণ ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশের কাতে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং নিচে যোগ করার জন্য পক্ষের দাবিদার হিসেবে উজ্জ্বল নাম লেখা হয়েছে।
এ সময় তারা ব্যানার ঝুলিয়ে, সার্ভেয়ার দিয়ে জায়গা মেপে, আশপাশের লোকজনকে মিষ্টি খাইয়ে সেখানে স্থাপনা তৈরির সরঞ্জাম জড়ো করেন।
জমির দাবিদার মিজানুর রহমান বলেন, “এটা আমার দাদার কেনা সম্পত্তি। পার্টি অফিস থাকায় আমরা জায়গায় আসতে পারিনি। এখন ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাই আমরা আমাদের জায়গা দখল নিতে এসেছি।”
একই কথা জানান ওই জমির আরেক দাবিদার মোখলেছুর রহমান।
বগুড়া জেলা জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ওই সম্পত্তি ছিল তিনজন হিন্দুর। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় তারা ভারতে চলে যান। পরে সরকার জায়গাটি নিয়ে নেয়। বাহাত্তর সাল থেকে আমরা সেখানে আছি এবং লিজের জন্য আবেদন করি।
“আবেদন করার পর মালিকানা দাবি করে বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ মামলা করলে আবেদনটি ঝুলিয়ে থাকে। পরে এক বছর আগে ওই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। সে কারণে লিজ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। আবেদনটি এখনও প্রক্রিয়াধীন আছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বগুড়ার সমন্বয় জাকিরুল ইসলাম বলেন, “ভেঙে ফেলা জায়গায় জুলাই-২৪ স্মৃতি মসজিদ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাশাপাশি যদি আন্দোলনে নিহত বা আহতদের পুনর্বাসন করা যায় তাও ভাবা হচ্ছে।”
মালিকারার দাবি করে নতুন ব্যানার লাগানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এতদিন তারা কোথায় ছিল। আমরা দখলমুক্ত করার পর এখন কেন এসেছে। তবে আমার জানামতে এটা সরকারি সম্পত্তি। তবে কাগজ দেখাতে পারলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়ায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করার পর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একাংশ।
একইসঙ্গে ভেঙে দেওয়া হয়েছে ঐতিহ্যবাহী টাউন ক্লাব এবং জেলা জাসদের (ইনু) কার্যালয়। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে জাতীয় পার্টি এবং শ্রমিক জোটের কার্যালয়েও।