“গৌরবগাঁথা ক্লাব কেন ভাঙা হল জানি না। এটা ক্রীড়া জগতের মানুষের বুকে বুলডোজার মারার মত।”
Published : 07 Feb 2025, 04:27 PM
বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী টাউন ক্লাব গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে সেটি আবার নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগ অফিস, জাসদ অফিস ও জাতীয় পার্টি অফিস বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলার সময় শহরের সাতমাথার টেম্পল রোডে অবস্থিত টাউন ক্লাবটিও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বগুড়ার প্রথম এই ক্লাবটির ধ্বংস্তুপ দেখতে শুক্রবার সকাল থেকে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। সেখানে ক্লাব ভেঙে ফেলা ঘটনায় সরব হন অনেকেই।
কেউ কেউ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, টাউন ক্লাব ভেঙে ‘ভালো মানসিকতার’ পরিচয় দেয়নি। কেউ কেউ বলছিলেন, আসলে এসব জায়গা দখলে নিতেই ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে’ ভেঙে ফেলা হয়েছে।
শহরের মালতি নগরের পারভেজ বলছিলেন, “টাউন ক্লাব বগুড়ার গর্ব ছিল। যদিও বেশ কিছু বছর ধরে সেখানে জুয়াও চলতো। তারপরও এটা ভাঙা ঠিক হয়নি।”
সেউজগাড়ী এলাকার আব্দুর রউফ বলেছেন, “গৌরবের টাউন ক্লাব কেন ভাঙা হলো বুঝলাম না। শুনছি, ভেঙে ফেলা জায়গা নাকি দখলে নিবে।
“প্রসাশনের কাছে অনুরোধ, ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির জায়গা কেউ যেন দখল করতে না পারে সে বিষয়ে ব্যাবস্থা নেওয়া হোক। পাশাপাশি নুতন করে ক্লাবটি গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্হার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “১৮৯৩ সালে ক্লাবটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটাই বগুড়ার প্রথম ক্লাব। এই ক্লাব অনেকবার কুচবিহারের মহারাজা টুর্নামেন্টে বিজয়ী হয়ে সুনাম কুড়িয়েছে।
“কলকাতার মাঠ কাপানো মাহবুবার রহমান (বড় কালু) খেলার হাতেখড়ি এই ক্লাব থেকে। পরে তিনি কলকাতার ওরিয়ন ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগ খেলে।”
এছাড়াও প্রথম বিভাগ ক্লাব ও জাতীয় টিমের হয়ে এই ক্লাবের অনেক খেলোয়ার খেলেছে। ঢাকার মাঠের আফজাল হোসেন, আজগর হোসেন, অমলেষ সেন, সম্রাট, শিমুল এই ক্লাবেরই সদস্য ছিলেন বলে জানান শহিদুল।
তিনি বলেন, “ঐতিহ্য বহনকারী এই ক্লাব ছিল বগুড়ার তথা দেশের, বিদেশের কাছে একটি পরিচিত নাম। গৌরবগাঁথা ক্লাব কেন ভাঙা হল জানি না। এটা ক্রীড়া জগতের মানুষের বুকে বুলডোজার মারার মত।”
ক্লাবটির জায়গা যেন বেহাত না হয় এবং নুতন করে নির্মাণের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।