শিশুটির ‘মা যাব, মা যাব’ আর্তনাদে এলাকার হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
Published : 17 Apr 2024, 09:23 PM
ফরিদপুরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছিলেন ইকবাল হোসেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে হাসপাতালে মারা যান তার স্ত্রী পপি বেগমও।
এই দম্পতির একমাত্র সন্তান ১৮ মাসের ইয়াসিন দুর্ঘটনার কবলে পড়েও বেঁচে যায়। এখন প্রতিনিয়তই সে তার মাকে খোঁজছে। তার ‘মা যাব, মা যাব’ আর্তনাদে এলাকার হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
যারা পরিবারটিকে সান্ত্বনা দিতে এসছেন তাদের চোখও ভিজে যাচ্ছে শিশুটির বুকভাটা কান্নায়। কেউ তাকে শান্ত রাখতে পারছিল না।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরের তেঁতুলতলা এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষ হয়। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে; তারা সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন।
হতাহতরা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ত্রাণ তহবিল থেকে টিন আনতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন।
খুলনা ও বরিশাল মহাসড়কে কেন ‘প্রতিদিন লাশ’
ফরিদপুরে দুর্ঘটনা: ত্রাণ আনতে গিয়ে লাশ হলেন একই পরিবারের ৫ জন
ফরিদপুরে দুর্ঘটনা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪, এক পরিবারের পাঁচজন
আলফাডাঙ্গা উপজেলার হিদাডাঙ্গা এলাকার ইকবাল হোসেন ও তার স্ত্রী পপি বেগম সন্তানকে সঙ্গে নিয়েই সেখানে যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান ইকবাল হোসেন। গুরুতর আহত অবস্থায় পপি বেগমকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মায়ের পাশেই ছিল শিশুটি। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পপি বেগম মারা যান।
সকালে পপি বেগমের বাবা-মা মেয়ের মরদেহের সঙ্গে ইয়াসিনকেও বাড়ি নিয়ে যান বলে বুধবার বিকালে জানান ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান।
তিনি বলেন, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে সড়কে ১৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ইকবাল হোসেনের বড় ভাই এনামুল শেখ বাদী হয়ে যাত্রীবাহী বাসের চালককে আসামি করে করিমপুর হাইওয়ে থানায় মামলা করেছেন।
এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত) মো. আলী সিদ্দিকীকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তদন্ত টিম কাজ শুরু করেছে।