উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। চাঁদপুরে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র।
ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করতে শনিবার সকাল থেকে ট্রলারে করে চাঁদপুরের মেঘনা ও পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকা এবং বিভিন্ন চরে গিয়ে মাইকিং করে নৌ-পুলিশ।
প্রচারে সকলকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার অনুরোধ জানানো হয়। এর পাশাপাশি গবাদি পশুসহ মালামাল নিরাপদে রাখা এবং প্রয়োজনে নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে বলা হয়।
এ সময় নদীতে কেউ যেন মাছ ধরতে না যায় সে বিষয়েও সতর্ক করা হয়।
নৌ-পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার সার্বিক পরিস্থিতি দেখে এ অঞ্চলের নৌ-পুলিশের প্রত্যেক থানা ও ফাঁড়ির সদস্যরা সক্রিয়ভাবে লঞ্চঘাট ও উপকূলীয় এলাকায় প্রস্তুত রয়েছে। একইসঙ্গে লঞ্চ ও ছোট নৌযানগুলোকে নিরাপদে থাকতে সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হচ্ছে।
এদিকে, শুক্রবার রাত থেকে চাঁদপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জসহ সব রুটের লঞ্চসহ সব ধরনের নৌ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ); চাঁদপুর।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, “বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
“ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বামদিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।”
তিনি আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিএ পরিচালকের নির্দেশে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা-চাঁদপুর, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-চাঁদপুর ভায়া শরীয়তপুর, মজু চৌধুরীর হাট (লক্ষ্মীপুর)-ইলিশা ঘাট (ভোলা) নৌপথে সব ধরনের লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি ১৭০ কিলোমিটার গতিতে শনিবার সন্ধ্যার দিকেই কক্সবাজার ও এর কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকায় এ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে শুরু করবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া কার্যালয়।
এই অবস্থায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বহাল থাকছে।
পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বরের পরিবর্তে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরের জন্য থাকছে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট উচ্চতায় প্লাবিত হতে পারে।