২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর দানবাক্স থেকে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
Published : 20 Apr 2024, 01:06 PM
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স থেকে এবার ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে মিলেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়নাও। এখন চলছে গণনার কাজ।
সাধারণত তিন মাস পর এই মসজিদের দানবাক্স খোলা হলেও এবার ৪ মাস ১০ দিন পর শনিবার সকালে এই দানবাক্স খোলা হয় বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় মসজিদের দানবাক্স খোলার সময় জেলা প্রশাসক ছাড়াও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মোমতাজসহ ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে ৭০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, পাগলা মসজিদ ও মাদ্রাসার ৩৪ জন শিক্ষক ও ১০২ জন ছাত্র টাকা গণনা শুরু করেন।
জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদ এ এলাকার মানুষের একটি আবেগের স্থান। যে কারণে আমরা প্রতিবারই দান হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা পেয়ে থাকি।
“আমরা মানুষের স্বপ্ন ও ইচ্ছা অনুযায়ী বর্তমান মসজিদের স্থানে একসাথে ৩০ হাজার মুসুল্লী নামাজ আদায় করতে পারে এমন একটি বিশাল মসজিদ নির্মাণ করব। আধুনিক স্থাপত্যের এ মসজিদ নির্মাণে অচিরেই নকশা চূড়ান্ত করাসহ কাজ শুরু হবে।”
জেল প্রশাসক আরও জানান, প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং এর অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এ ছাড়া দানের টাকায় জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুস্থদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
তিনি জানান, এর আগে ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২৩ বস্তা টাকা থেকে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। নগদ টাকার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল।
কথিত আছে, প্রায় পাঁচশ বছর পূর্বে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক এক ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত।