এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন বলেও ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
Published : 20 Apr 2025, 04:44 PM
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এক ব্রিফিংয়ে এই সময় বেঁধে দেন। এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন বলেও ঘোষণা দেন।
ব্রিফিংয়ের সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণ দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
শনিবার বিকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে প্রতীকী গদিতে আগুন জ্বালানোর কর্মসূচি পালন করেন।
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।
২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে ‘লাল কার্ড’ দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি গত ১৩ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এসবের মধ্যে ১০ এপ্রিল কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরীর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মহানগর হাকিম আদালতে মামলা করেন।
আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে।
এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া এবং ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন।
১৬ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের মিছিলের পরপরই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিপক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন কুয়েট শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
আরও পড়ুন:
কুয়েট উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল
কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি: এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
গোলাম মুরশিদের ধারাবাহিক রচনা: ঠুমরি আর গজল
কুয়েটে সংঘর্ষ: ৩৭ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে
৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার: কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে ঢাবিতে