Published : 17 Oct 2024, 06:20 PM
গাজীপুরে পৃথক অগ্নিকাণ্ডে বসতবাড়ি ও মিনি গার্মেন্টস দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় গাজীপুর নগরীর কোনাবাড়ী থানার বাইমাইলে এবং ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখণ্ড এলাকায় এসব অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন এবং কোনাবাড়ী মর্ডান ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখণ্ড এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমার ঘরে নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিল। ওই টাকাসহ ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হঠাৎ আগুন লাগায় কিছুই রক্ষা করতে পারি নাই।”
নেত্রকোণার শামসুল হকের স্ত্রী রুবিনা আক্তার বলেন, “আমাদের ঘরের সমস্ত কাপড়-চোপড় এবং মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
“আমরা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমাদের প্রত্যেকের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই রইলো না।”
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পোশাক শ্রমিক দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, “আমার ঘরে নগদ তিন লাখ টাকা এবং দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল। কিছু স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করতে পারলেও আমার সবগুলো টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”
একটি বাড়ির মালিক কবির হোসেন সরকার বলেন, “হঠাৎ একটি কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন পাশের ২০টি কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। ওইসব কক্ষে থাকা টিভি, ফ্রিজ, আলমারী, ওয়ারড্রপ, লেপ-তোষক, খাট, স্বার্ণলঙ্কার, হাড়ি-পাতিল এবং নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল পুড়ে যায়। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখন্ণ্ড এলাকার ব্যবসায়ী কবির হোসেন সরকারের বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ড হয়। খবর পেয়ে শ্রীপুরের মাওনা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি বলেন, “আগুনে ওই বসতবাড়ির ২০টি ঘর পুড়ে গেছে। ওইসব কক্ষে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আশপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় শ্রমিকেরা পরিবারসহ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো। তদন্তের পর আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।”
এদিকে নগরীর কোনাবাড়ী থানার (বাইমাইল) এলাকার মিনি গার্মেন্টসসহ ২৫টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ওই এলাকার গণির আড়তে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কোনাবাড়ী মর্ডান ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা হলেন- মিনি গার্মেন্টসের মালিক ইলিয়াস, হিট ট্রান্সফার মেশিনের দোকান মালিক রজব খান, সেলুন মালিক মিঠু, প্রিন্টিং দোকান মালিক খায়রুল আলম, হোল বাটন মেশিন দোকানের মালিক এরশাদ ও গেঞ্জির গোডাউনের মালিক তোতা মিয়া।
তাদের দাবি, আগুনে তাদের দোকানের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নগদ টাকাসহ প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কোনাবাড়ী মর্ডান ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, বাইমাইল এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। তদন্তের পর আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।”